সুন্দরবনে নৌ চলাচল বন্ধের সুপারিশ -জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ দলের সংবাদ সম্মেলন

(সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ৯ ডিসেম্বর জাহাজের ধাক্কায় তেলবাহী ট্যাংকার ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে ডুবে যায়। ফাইল ছবি) সুন্দরবনের পরিবেশকে ‘মহামূল্যবান’ এবং ‘বৈচিত্র্যপূর্ণ’ উল্লেখ করে এর মধ্য দিয়ে নৌ চলাচল বন্ধের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল। দলটি বলেছে, সুন্দরবনের কিছু প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুকূলে থাকায় এবারের তেল দুর্ঘটনার প্রভাব কম পড়েছে। তবে পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এই বনের ভেতরে তেল ট্যাংকার চলাচল সুন্দরবনের পরিবেশ ও বনজীবীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। শ্যালা নদীতে ট্যাংকারডুবিতে তেলের প্রভাব সীমিত বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল। সুন্দরবনে তেল বিপর্যয়ের ঘটনায় ২৫ সদস্যের জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল ২৩ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনে অবস্থান করে। তাঁরা সুন্দরবনের শ্যালা এবং পশুর নদের তেল ছড়িয়ে পড়া এলাকা পরিদর্শন করে। সেখানে তাঁদের দেখা পর্যবেক্ষণ আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন। এ সময় পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক দলের প্রধান এমিলিয়া ওয়ালস্ট্রর্ম, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বিট্রিস টালডুন, পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। ম্যানগ্রোভ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর আপাতত তেলের প্রভাব সীমিত পরিমাণে দেখা গেছে, উল্লেখ করে এমিলিয়া ওয়ালস্ট্রর্ম বলেন, জোয়ার-ভাটার কারণে পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল। ফলে বনে তেলের অনুপ্রবেশে কম হয়েছে। এর সঙ্গে তেল সংগ্রহে স্থানীয় জনসাধারণ তৎপর থাকায় ক্ষতি কম হয়েছে। তবে তেল সংগ্রহের কারণে স্থানীয় লোকজন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে কি না, সে বিষয়টি তাঁরা পর্যবেক্ষণ করছেন। সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ৯ ডিসেম্বর জাহাজের ধাক্কায় তেলবাহী ট্যাংকার ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে ডুবে যায়। ১৫ ডিসেম্বর সহায়তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি দেয় সরকার। এর পরই ২২ ডিসেম্বর সুন্দরবন পর্যবেক্ষণে যায় এমিলিয়া ওয়ালস্ট্রর্মের নেতৃত্বাধীন ২৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। জাতিসংঘ দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ফিনল্যান্ড থেকে আসা জাতিসংঘের পরিবেশ ও দুর্যোগবিষয়ক উপদেষ্টা এমিলিয়া ওয়ালস্ট্রর্ম। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংস্থার ১২ জন বিশেষজ্ঞও ওই দলে অংশ নেন। জাতিসংঘের দলটিতে মেক্সিকো উপসাগর ও আলাস্কায় তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত দলে কাজ করা চারজন সদস্য রয়েছেন। আটটি দেশ থেকে আসা এই দলের ১৪ জন জাতিসংঘের হয়ে বিভিন্ন দেশে তেল অপসারণ বিষয়ে কাজ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.