আত্মগোপনে নিরব-ঋদ্ধি

নববধূ তাশফিয়া তাহের চৌধুরী ঋদ্ধিকে নিয়ে আত্মগোপনে জনপ্রিয় মডেল-অভিনেতা নিরব। খোঁজ মিলছে না তাদের। মিডিয়া কিংবা  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও দিনভর চেষ্টা করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। নিরবের ব্যবহৃত সব মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে। গতকাল বেশ ক’বার তার ফেসবুকে ম্যাসেজ পাঠিয়েও কোন সাড়া মেলেনি নিরবের কাছ থেকে। সব মিলিয়ে রহস্যজনকভাবেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন এই তারকা। মিডিয়ায় চাউর হয়েছে যে, শ্বশুরের করা মামলার মুখোমুখি না হওয়ার জন্যই তার আত্মগোপন। অবশ্য নিরবকে না পাওয়ায় এ বিষয়ে তার কোন মন্তব্য মেলেনি। জানা গেছে, মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে নিরবের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছেন শ্বশুর আবু তাহের চৌধুরী। এই খবরটি জানার পর থেকেই মূলত আত্মগোপনে আছেন নিরব। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক ঋদ্ধিকে বিয়ের পর কেন তিনি আড়ালে রয়েছেন সেটি নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একাধিকবার নিরবের মোবাইলে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার কাছের অনেক বন্ধুবান্ধব, নির্মাতা ও ঘনিষ্ঠজনও নিরবের অবস্থান সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারছেন না। সর্বশেষ ২৯শে ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর নিজের ফেসবুক পেজে বিয়ের সময় তার ও ঋদ্ধির তোলা একটি ছবি পোস্ট করেন নিরব। এর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘কোন ফটোসেশনের ছবি নয়, আসল ছবি। ঘটনা সত্য’। এভাবেই নিজের বিয়ের খবরটি প্রথমবারের মতো ফেসবুকে সবার সঙ্গে ভাগ করেন তিনি। এর আগে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় ফোন করে নিরব নিজের বিয়ের শুভ সংবাদটি জানান। ২৬শে ডিসেম্বর নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্রী তাসফিয়া তাহের ঋদ্ধির সঙ্গে ঘরোয়াভাবে তার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এ সময় নিরবের পরিবার ও খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নিরব বলেছিলেন, ঋদ্ধির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল আমার। তবে এবার আমার পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো। অনেক ভাল লাগছে। অন্যরকম অনুভূতি। সবাই আমাদের দু’জনের জন্য দোয়া করবেন। বিয়ে ২৬ তারিখ করলেও সে সময় সেটা গোপন রাখেন নিরব। গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন ২৯শে ডিসেম্বর বিকালে। অন্যদিকে ২৭শে ডিসেম্বর উত্তরা থানায় নিরবের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন আবু তাহের চৌধুরী। মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, তার মেয়ে তাশফিয়া তাহের চৌধুরী ঋদ্ধির সঙ্গে এক চিকিৎসকের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু ২৭শে ডিসেম্বর একটি অনুষ্ঠানের জন্য সাজগোজ করতে উত্তরা পারসোনা শাখায় গেলে নিরব তাকে অপহরণ করে। তবে নিরবের বেশ ক’জন ঘনিষ্ঠজন ও নির্মাতা জানিয়েছেন, জনপ্রিয় তারকা নিরবের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করাটা সত্যিই হাস্যকর। তাছাড়া পার্লারে পুরুষদের প্রবেশের নিয়মও নেই। যদিও আত্মপক্ষ সমর্থন করে এ বিষয়ে নিরবের কোন বক্তব্য মেলেনি। ঋদ্ধির পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ের বিষয়টিও আগে এড়িয়ে গেছেন তিনি। অন্যদিকে ২৯শে ডিসেম্বর রাতে ঋদ্ধিও নিজের ফেসবুক পেজের কাভার ফটো পরিবর্তন করে নিরবের সঙ্গে বিয়ের ছবি দিয়েছেন। বিয়ের ছবিতে নিরব-ঋদ্ধিকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিলো। এদিকে এই অভিযোগ ও মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ ঋদ্ধির সঙ্গেই মূলত কথা বলবে বলে জানা গেছে। তিনি যদি বাবার তোলা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তাহলে এই অপহরণ মামলার কোনো ভিত্তি থাকার কথা নয়। আর যদি সেটা না করেন তবে এই মামলায় আরও বিপাকে পড়তে পারেন নিরব। তবে বিয়ের ঘোষণার পর পরই স্ত্রী ঋদ্ধিকে নিয়ে নিরবের আত্মগোপনে চলে যাওয়ার বিষয়টি রহস্যময় হয়ে উঠেছে।

No comments

Powered by Blogger.