সেনা আদালত বৈধ নয়

পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের বিচারের জন্য সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় সিনেটররা। একইসঙ্গে তারা সামরিক আদালতের অপব্যবহার যাতে না হয় তার নিশ্চয়তা দাবি করেছেন। গত কয়েকদিন আগে সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সর্বদলীয় সিদ্ধান্তের পর নতুন করে বিরোধীদলগুলোর পক্ষ থেকে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হল। পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি সিনেটর রাজা রব্বানি এ নিয়ে সবচেয়ে সরব হয়েছেন। তিনি বলেছেন, সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার কোনো বৈধতা সংসদের নেই। সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭৭ ও ’৯৮ সালে সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল কিন্তু পরে আদালত তাকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন।
ওই সময় সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার ফলাফলও সন্তোষজনক নয়। তিনি বলেন, সে সময় সামরিক আদালত প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছিলেন; এজন্য ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। রাজা রব্বানি আরও বলেন, বেসামরিক গণতান্ত্রিক সরকার থাকার পরও সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা হলে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস হবে এবং জনমনে এ ধারণা তৈরি হবে যে, বেসামরিক প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে; তাদের সরিয়ে দেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের সমাধান সম্ভব নয় বরং এ জন্য বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করা দরকার।
মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট বা এমকিউএমের সিনেটর ব্যারিস্টার ফারুক নাসিমও সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, সামরিক আদালত গঠন করা হলেও তা যেন রাজনৈতিক দলগুলোকে দমনে ব্যবহার না করা হয়।
এদিকে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় অ্যাকশন প্ল্যান বা কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। নওয়াজ বলেন, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিশেষ সমস্যা সমাধানে এ বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বিশেষ সামরিক আদালতে বিচারের আগে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা গুরুত্বের সঙ্গে মামলাগুলো খতিয়ে দেখবে বলেও জানান তিনি।
শিশুসহ নিরীহ বেসামরিক মানুষ হত্যায় জড়িত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের বিচার সামরিক আদালতে হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সরকার যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাতে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে নওয়াজ শরিফ বলেন, সরকার ও জনগণের যৌথ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদ দূর করা হবে। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে জাতীয় ঐকমত্যের কারণেই একক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বৈঠকে পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফসহ শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন। ডন।

No comments

Powered by Blogger.