তিনি নেই, তবু ছিলেন হুমায়ূন

জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে অনেক আয়োজন হলো। সেসব আয়োজনে তাঁর কাজ নিয়ে আলোচনা হলো, তাঁর লেখা বই নিয়ে মেলা হলো, তাঁর পছন্দের কিংবা নিজের লেখা গান গাওয়া হলো। এত সব আয়োজন যাকে নিয়ে, সেই মানুষ হুমায়ূন আহমেদ সশরীরে ছিলেন না কোথাও। তবু কি ছিলেন না? লেখক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের শারীরিক না থাকাকে অগ্রাহ্য করেই প্রিয়জনেরা তাঁর ৬৬তম জন্মদিন উদ্যাপন করলেন। গতকাল ১৩ নভেম্বর ছিল জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৬৬তম জন্মদিন। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাঁর জন্মদিন উদ্যাপিত হলো।

>>হ‌ুমায়ূন আহমেদ রচনাবলি–৮–এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বই হাতে অতিথিরা l প্রথম আলো
বৃহস্পতিবার হুমায়ূনের জন্মদিনের শুরুটা হয়েছিল তাঁর সমাধিতে ফুল দিয়ে। প্রথম আলোর গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল সাতটার দিকে নুহাশপল্লীতে স্বামীর কবরে ফুল দেন মেহের আফরোজ শাওন। এর আগে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে ঢাকার দক্ষিণ হাওয়ায় এবং গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে কেক কাটা হয়।
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, জন্মদিনে লেখকের পৈতৃক বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী নানা কর্মসূচি পালন করেন।
গণগ্রন্থাগার চত্বরে বইমেলা: ‘ও কারিগর, দয়ার সাগর, ওগো দয়াময় চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়’—হুমায়ূন আহমেদের খুব পছন্দের গানটি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের খোলা প্রাঙ্গণে ১৬টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে হুমায়ূন আহমেদের একক বইমেলার উদ্বোধন হয় বিকেলে। গানটি পরিবেশন করেন সেলিম চৌধুরী।
একগুচ্ছ বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে পাঁচ দিনের হুমায়ূন আহমেদ বইমেলার উদ্বোধন করেন মেহের আফরোজ শাওন। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন লেখক-বন্ধু-সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী, শাকুর মজিদ; প্রকাশকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলমগীর রহমান, মাজহারুল ইসলাম, মিলন নাথসহ অনেকে। মেলা উদ্বোধনের পর অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত সালেহ চৌধুরী সম্পাদিত হুমায়ূন আহমেদ রচনাবলি-৮ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
পাঁচ দিনের এ বইমেলা প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে কবিতাপাঠের আসরে হুমায়ূন আহমেদকে নিবেদিত কবিতাপাঠ, অণুগল্পপাঠ ও পথনাটক মঞ্চায়ন।
চ্যানেল আইতে হুমায়ূন মেলা: চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে মুখরিত হুমায়ূন মেলায় ছিল তাঁর ভক্তদের চঞ্চল পদচারণ। সকালে জন্মদিনের বর্ণিল উৎসবের পরিবেশে ৬৬টি হলুদ বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় মেলার আনুষ্ঠানিকতা। অতিথিদের স্বাগত জানান চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। মেলামঞ্চে ‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো বরষায়’, ‘চলো না বৃষ্টিতে ভিজি’, ‘আমি আজ ভেজাব চোখ সমুদ্রজলে’সহ হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় বহু গান মঞ্চে পরিবেশিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.