সিলেটে ছাত্রলীগ জনতা তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ আহত ২০

সিলেট নগরীতে ছাত্রলীগ নেতা তারেক উদ্দিন তাজ ও তার ভাই তায়েফের অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদকারীদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে দলীয় ক্যাডাররা। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাজ বাহিনীর প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়।
বুধবার রাতে নগরীর ঘাসিটুলায় এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।তাজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ভাগ্নে হওয়ায় তার দাপটে লোকজন অতিষ্ঠ বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। সংঘর্ষের পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় ফের সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে। কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় থানায় এখনও মামলা হয়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বুধবার রাত ৮টার দিকে ইউনাইটেড বাসার মালিক ও ব্যবসায়ী কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে স্থানীয় বাসিন্দারা বেত বাজার সমিতির কার্যালয়ে এক সভায় মিলিত হন। সভায় এলাকাবাসী ঘাসিটুলা এলাকায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারেক উদ্দিন তাজ ও তার ভাই তায়েফের বিরুদ্ধে অত্যাচার নির্যাতনের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ জানান।এ সময় লোকজন ঘাসিটুলা বাজারে জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের কার্যালয়ে গিয়ে তারেক উদ্দিন তাজ ও তার লোকজনকে উচ্চৈঃস্বরে অশ্লীল গান বাজানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাজের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। হামলায় ব্যবসায়ী, স্কুলছাত্রসহ সাধারণ লোকজন আহত হন। এক পর্যায়ে এলাকার সাধারণ মানুষ জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্য জোট ১০নং ওয়ার্ড কার্যালয়ে অবস্থানরত তারেক উদ্দিন তাজ ও তার লোকজনের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় গোটা বেত বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্থানীয়দের অভিযোগ- পুলিশের উপস্থিতিতেই তাজের লোকজন ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। ইউনাইটেড বাসা মালিক ও ব্যবসায়ী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান জানান, তারেক উদ্দিন ও তার লোকজনের অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করে তারা নিরীহ লোকজনকে হয়রানি করে চলছে। তাদের কারণে এলাকায় অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ জানান, তারেক তায়েফের লোকজন দলীয় প্রভাবে এলাকায় যা ইচ্ছে তাই করছে। তাদের হামলা থেকে জেএসসি পরীক্ষার্থীরাও রেহাই পাচ্ছে না। তারা পরিকল্পিতভাবে একের পর এক তাণ্ডব চালালেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। রাত সাড়ে ১২টায় পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে। তারেক উদ্দিন তাজ জানান, তিনি ঘটনার সময় বাইরে ছিলেন। কাউন্সিলর সালেহ আহমদসহ বিএনপি-জামায়াতের লোকজন জড়ো হয়ে জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোটের কার্যালয়ে হামলা চালায়। এতে তার পক্ষের কয়েকজন আহত হন বলে তিনি দাবি করেন। ককটেল, গুলি ছোড়া ও হামলার ঘটনা তিনি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এলাকার বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় একটি পক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.