সেনা স্থাপনার জন্য জমি অধিগ্রহণ না করার দাবি -টিআইবি

কৃষিজমি ও বনভূমিতে সেনানিবাস বা অন্য কোনো স্থাপনা না করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে আটটি সংগঠন। তাদের মতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে সেনা স্থাপনার জন্য প্রায় ৫০ হাজার একর ভূমি বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে অনেক বসতি উচ্ছেদ করতে হবে এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস হবে।
মানবাধিকার, সুশাসন ও উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা এ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ বক্তব্য দেওয়া হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ী স্থাপনা, কারখানা প্রতিষ্ঠা, নগরায়ণ, আবাসন প্রকল্প ও সেনানিবাস প্রতিষ্ঠার নামে একের পর এক বসতভিটা, কৃষিজমি, বনভূমি, জলাধার বেআইনিভাবে বেহাত হচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আদিবাসী ফোরাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), নিজেরা করি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

>>ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গতকাল জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল l ছবি: প্রথম আলো
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের দুঃখ, দেশে প্রতিকার করার সুযোগ নেই। যেখানে ন্যূনতম ন্যায়বিচারের সুযোগ নেই সেখানে কীভাবে আমরা দেশে গণতন্ত্র নিয়ে বড়াই করি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি।’
সুলতানা কামাল বলেন, রাজধানীর একটা বড় অংশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাদের এই পরিধি ক্রমেই বাড়ছে। আর রাষ্ট্র তাদের এই মনোভাবকে সমর্থন জুগিয়ে চলেছে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি এসব অন্যায়ের কোনো প্রতিকার করতে না পারেন, তাহলে দেশের ভার নেওয়ার নৈতিক অধিকার আপনাদের নেই।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে আট সংস্থার পক্ষে দেশের পাঁচটি এলাকার ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে করা অনুসন্ধানের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, কক্সবাজারের রামুতে এক হাজার ৮০০ একর, বান্দরবানের রুমায় ৯৯৭ একর, পাবনার চাটমোহরে এক হাজার ৪০৮ একর এবং নোয়াখালীর হাতিয়া ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার চরাঞ্চলে প্রায় সাড়ে চার হাজার একর কৃষিজমি সেনাবাহিনীকে বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে কৃষিজমি ও বাস্তুভিটা থেকে প্রায় সাত হাজার মানুষ উচ্ছেদ হবে।

No comments

Powered by Blogger.