মেয়র লুৎফুর বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার -লন্ডনে প্রতিবাদ সভায় বক্তারা by তবারুকুল ইসলাম

পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসে বাংলাদেশি নেতৃত্ব গড়ে উঠতে দেওয়া হয়নি। বর্তমান স্বতন্ত্র মেয়র লুৎফুর রহমানও বর্ণবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী আক্রমণের শিকার। লেবার ও কনজারভেটিভ পার্টি তাঁর বিরুদ্ধে গোপনে ঐক্যবদ্ধ। ‘টাওয়ার হ্যামলেটসের গণতন্ত্র রক্ষা করো’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বললেন।
পূর্ব লন্ডনের ওয়াটারলিলি হলে গত বুধবার বিকেলে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কার্যক্রমে নজরদারি করতে তিনজন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানাতেই এ সভা।
সভায় লেবার দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও লন্ডনের মেয়র কেন লিভিংস্টোন, যুদ্ধবিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত জর্জ গ্যালাওয়ে এমপি, লেবার পার্টির নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য ক্রিস্টিন শক্রফটের পাশাপাশি সমাজতন্ত্রপন্থী কর্মী, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও কমিউনিটি নেতাসহ অন্তত ২০ জন বক্তব্য দেন। তাঁরা অনেকটা একই সুরে বলেন, লুৎফুর রহমান অশ্বেতাঙ্গ এবং মুসলিম হওয়ার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ শিক্ষা, আবাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচারসহ সব ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্য অসাধারণ।
নির্বাচনের আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, লুৎফুর রহমান মুসলিম এবং বাংলাদেশি সংগঠনগুলোকে বেশি সহায়তা দিচ্ছেন এবং কাউন্সিলের অনুদান (গ্রান্টস) প্রদান এবং বেসরকারি খাতে কাউন্সিলের ঘরবাড়ি (প্রপার্টি) বিক্রির ক্ষেত্রে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। পরে সরকারের এক তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার দাবি করা হয়। এরপর কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারবিষয়ক মন্ত্রী এরিক পিকলস টাওয়ার হ্যামলেটসে হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত জানান। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লুৎফুর রহমান স্বপদে বহাল থাকলেও মন্ত্রী তিনজন কমিশনার নিযুক্ত করবেন, যাঁরা কাউন্সিলের সার্বিক কার্যক্রম নজরদারি করবেন।
বুধবারের সভায় নিজ দলের সমালোচনা করে কেন লিভিংস্টোন বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে যখনই মেধাবী ও উদ্যমী কোনো নেতা উঠে এসেছে, লেবার পার্টি তখনই নানা অভিযোগ তুলে তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, মন্ত্রী এরিক নির্বাচিত একজন মেয়রকে ছয় মাস আগেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চাইলে ওই এলাকায় নির্বাচনে এরিককে প্রার্থী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় মেয়র লুৎফুর বলেন, লন্ডনের মতো একটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে একজন অশ্বেতাঙ্গ এবং মুসলিম মেয়র হয়ে সফলভাবে কাউন্সিল পরিচালনা করছেন—এতে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো বিব্রত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তদন্ত করে তারা আমাকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সে রকম কিছু তারা খুঁজে পায়নি।’

No comments

Powered by Blogger.