এরশাদ মাঠে মারা? by তৌফিক মারুফ ও হায়দার আলী

শরীফ আহমেদ শামীম ও শাহীন আকন্দ, গাজীপুর থেকে
"এই মুহূর্তে আমিসহ গাজীপুর জাতীয় পার্টির সব নেতা-কর্মী অধ্যাপক এম এ মান্নানের টেলিভিশন মার্কার পক্ষে মাঠে অবস্থান করছি।
আর ভোটের বাকি আছে মাত্র এক দিন। এখন আমরা কী করে ভোল পাল্টে ফেলি, মুখ ফিরিয়ে নেই। আমাদের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বললেও এখন আর তাঁর ওই কথায় কান দেওয়ার কোনোই সুযোগ নেই। তাঁর কথায় 'না' বলা ছাড়া কিছু করতে পারছি না। আমরা টেলিভিশনের পক্ষেই আছি এবং থাকব।"
গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় কালের কণ্ঠকে এসব কথা বলেন।
এর আগে গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লাকে সমর্থন দেন। এ প্রসঙ্গে গাজীপুর জাপার সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমাদের তো এলাকায় থাকতে হয়। মান-ইজ্জত নিয়ে বাঁচতে হবে। মান-সম্মানের জন্যই তো রাজনীতি করি।' তিনি আরো বলেন, 'কেবল আমি একা নই, আমাদের সভাপতিসহ জেলা জাপার সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ আছি টেলিভিশনের পক্ষে। এ ছাড়া চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের লিখিত বা মৌখিকভাবেও কিছু জানানো হয়নি। আমরা মিডিয়া ও লোকমুখে শুনেছি।'
আজমত উল্লার প্রতি এরশাদের সমর্থনের বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাজী মাহমুদুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এটা একটা ষড়যন্ত্র। স্যারকে নানা চাপ দিয়ে এটা করানো হয়েছে। গাজীপুরে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা তাঁদের মতো করে কাজ করছে। স্যার আমাকে কোনো নির্দেশনা দেননি।'
ওই জাপা নেতা আরো বলেন, 'আমরা জানি গাজীপুরে আমাদের প্রায় দেড় লাখ ভোট রয়েছে। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের আরো প্রায় দুই লাখের মতো মানুষ আছে যারা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কথার সম্মান রাখে। কিন্তু এবার যে পরিস্থিতি তাতে এই মুহূর্তে এসে চেয়ারম্যানের কথায় কেউ আর সম্মান জানাতে প্রস্তুত নয়। কারণ আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে কিছুই দেয়নি, এমনকি তাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর মামলা প্রত্যাহার করলেও এরশাদের একটি মামলাও প্রত্যাহার করেনি। এমন অনেক বিষয় নিয়ে সরকার বা আওয়ামী লীগের প্রতি জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা এমনিতেই ক্ষুব্ধ।'
গাজীপুর রানী বিলাস মনি সরকারি বিদ্যালয়ের পাশের রাস্তায় টেলিভিশন প্রতীকের ব্যাচ পকেটে লাগিয়ে অধ্যাপক এম এ মান্নানের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করছিলেন জাতীয় পার্টির সমর্থক আওলাদ হোসেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'চেয়ারম্যানের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, কিন্তু গাজীপুরের পরিস্থিতি ভিন্ন। এখানে শুরু থেকেই আমরা বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে কাজ করছি। আমাদের চেয়ারম্যানও অধ্যাপক মান্নানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এখন শেষ মুহূর্তে এসে তিনি কেন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন তা রহস্যজনক। আমরা এখন তাঁর ওই সিদ্ধান্ত মানতে পারব না।'

No comments

Powered by Blogger.