গাজীপুর সিটি নির্বাচন উৎসবমুখর গাজীপুর by শরিফুল হাসান ও মাসুদ রানা

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ কাল শনিবার। নবগঠিত এই সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন নিয়ে গাজীপুর উৎসবমুখর। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। নগরে নেমেছে র‌্যাব-বিজিবি। নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার নির্বাচনী এলাকায় বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের দিন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকবে। তবে পূর্বনির্ধারিত পাবলিক পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখছি। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’
নির্বাচন কমিশন থেকে জানা যায়, নির্বাচন উপলক্ষে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১১ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার নির্বাচনী কর্মকর্তা।
পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গড়া ৫৭টি ভ্রাম্যমাণ দল ও ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। প্রতিটি দলে ১২ জন করে সদস্য থাকবেন। তিনটি ওয়ার্ডের জন্য থাকবে একটি করে ভ্রাম্যমাণ দল। এ ছাড়া থাকবে র‌্যাবের ২৮টি দল। প্রতিটি দলে থাকবেন আট থেকে ১০ জন সদস্য। প্রতিটি দল দুটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবে। এ ছাড়া দেড় শতাধিক বিজিবির সদস্য নির্বাচনী এলাকায় টহল দেবেন। ৫০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন।
গাজীপুর জেলা পরিষদের মিলনায়তনে গতকাল বিকেলে র‌্যাব-১ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কিসমত হায়াৎ সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকায় র‌্যাব-১-এর পক্ষ থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে পোশাকধারী এবং গোয়েন্দা মিলিয়ে ৮৪৭ জন র‌্যাব সদস্য সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত থাকবে।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী সাতজন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ছয়জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান এবং বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান। আজমত উল্লার প্রতীক দোয়াত-কলম। আর মান্নানের প্রতীক টেলিভিশন। এ ছাড়া মেয়র পদে লড়ছেন রিনা সুলতানা। তাঁর প্রতীক প্রজাপতি। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও আছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা মেজবাহ উদ্দিন। তাঁর প্রতীক হাঁস। তবে বিএনপি তাঁকে সমর্থন দেয়নি। এঁদের বাইরে নাজিম উদ্দিন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ও আমান উল্লাহ তালা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সম্মিলিত নাগরিক কমিটির ব্যানারের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচন ঘিরে প্রার্থী, দলীয় নেতা-কর্মী, স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটারদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

No comments

Powered by Blogger.