জনগণের ওপর নজরদারি ‘সঠিক পথে ছিল না’

যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ওপর প্রশাসনের নজরদারি ‘সঠিক পথে ছিল না’ বলে মত দিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। জনগণের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের কঠোর সমালোচনা করেছেন তাঁরা। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণ সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মস্কো যাবেন কি না, তা নিশ্চিত করেনি হোয়াইট হাউস। মার্কিন কংগ্রেসের জুডিশিয়ারি কমিটিতে গত বুধবার শুনানিতে অংশ নেন ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির নেতারা। শুনানিতে তাঁরা মার্কিন সংবিধান লঙ্ঘন করে জনগণের ওপর নজরদারি করতে ফোন রেকর্ড সংগ্রহ করার কঠোর সমালোচনা করেন। এভাবে নজরদারি করায় প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভর্ৎসনাও করেন আইনপ্রণেতারা। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত আইনপ্রণেতা জো লফগ্রেন বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে মনে করি, জনগণের ওপর নজরদারির বিষয়টি সঠিক পথে ছিল না।’ মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেন জনগণের অনলাইন তৎপরতা ও ফোন রেকর্ডের ওপর প্রশাসনের ওই নজরদারির খবর ফাঁস করে দেন। স্নোডেন গত ২৩ জুন থেকে রাশিয়ার শেরেমেয়িতেভো বিমানবন্দরের ট্র্যানজিট এলাকায় অবস্থান করছেন। নজরদারি তথ্য ফাঁস করায় স্নোডেনের বিরুদ্ধে" মামলা করেছে মার্কিন বিচারবিভাগ। মামলার আগেই যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে হংকং যান স্নোডেন। সেখান থেকে রাশিয়া পৌঁছান তিনি। মার্কিন বিচার বিভাগ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, ফোন রেকর্ড বা অনলাইন বার্তা সংগ্রহের পর গোপন আদালতের মাধ্যমে আইনি দিক খতিয়ে দেখা হয়। এরপর জঙ্গি হামলা ঠেকাতে আইনের আওতায় থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জেমস কোল হাউস জুডিশিয়ারি কমিটিকে বলেন, ‘আমাদের এই প্রকল্প ও অন্যান্য গোয়েন্দা কার্যক্রম জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নাগরিক অধিকারের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই পরিচালনা করা হয়।’ এর জবাবে আইনপ্রণেতারা বলেন, নাইন-ইলেভেনের পর প্যাট্রিয়ট অ্যাক্টের (দেশপ্রেমবিষয়ক আইন) আওতায় খুব সামান্য পরিসরে নজরদারিকে বৈধতা দেওয়া হয়। তা-ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা হুমকির ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য বলে উল্লেখ করা হয়। ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা জন কনিয়ার্স বলেন, মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট লঙ্ঘন করেছে। এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। শুনানিতে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নজরদারির মাধ্যমে কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী হামলার ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়ার উদাহরণ তুলে ধরেন। এদিকে ওবামার মস্কো সফর নিয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কারনি গত বুধবার বলেন, ‘নতুন করে কোনো ঘোষণা নেই। সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্টের রাশিয়া সফরের কথা রয়েছে।’ সেপ্টেম্বরে রাশিয়ায় জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই সম্মেলনের আগেই মুখোমুখি আলোচনার জন্য একবার মস্কো সফরের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পুতিন। গত ১৭ জুন ওই আমন্ত্রণে সাড়াও দিয়েছিল হোয়াইট হাউস। কিন্তু স্নোডেনকে নিয়ে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন পরিস্থিতি সেপ্টেম্বরের আগে ওবামার রাশিয়া সফর নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করেছে। আর এ ব্যাপারে জে কারনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.