মুরসিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাল ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে মিসরের সেনাবাহিনী গৃহযুদ্ধ থেকে দেশকে রক্ষা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। মিসরে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। এ সংকট নিয়ে আলোচনা করতে ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন এখন কায়রোতে অবস্থান করছেন। বুধবার তিনি মিসরের নতুন নেতা, মুরসিবিরোধী আন্দোলন তামারোদের তৃণমূল পর্যায়ের সদস্য এবং মুরসির সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে ইইউর এই শীর্ষ কূটনীতিক ক্ষমতাচ্যুত মুরসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সক্ষম হননি। সেনাবাহিনী তাঁকে ৩ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছে। ক্যাথেরিন অ্যাস্টন বুধবার কায়রোতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে মুরসিকে মুক্তি দেওয়া হবে। আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে তিনি ভালো আছেন। আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম।’ গত সোমবার কায়রো সফরকারী মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রাদারহুডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। তামারোদের নেতারাও তাঁর সঙ্গে বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অ্যাস্টনের সঙ্গে বুধবারের বৈঠক প্রসঙ্গে এফজেপির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমর দারাগ দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মিনাকে বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিরা ইইউকে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যাননি। অ্যাস্টনের অনুরোধেই ওই বৈঠক হয়েছে। অ্যাস্টনের কায়রো সফরের মধ্যেই মুরসিপন্থী হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বুধবার কায়রোর রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন। নতুন অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভা গঠনের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল ব্রাদারহুড। সংগঠনটি নতুন মন্ত্রিসভাকে অবৈধ আখ্যা দিয়েছে। কয়েক হাজার মুরসিপন্থী বিক্ষোভকারী মন্ত্রিসভার সদর দপ্তরের বাইরে জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। তাঁরা কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান। বিক্ষোভকারীরা হাতে ‘শহীদের জন্য প্রতিশোধ’, ‘সামরিক শাসন নিপাত যাক’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত ব্যানার বহন করলেও বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। এদিকে মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জর্ডান সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বুধবার বলেছেন, মিসর একটি গৃহযুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। সামরিক বাহিনী নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আরব দেশটিকে মার্কিন সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি একটি বড় বিবেচ্য বিষয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে মুসলিম ব্রাদারহুড অভিযোগ করেছে, সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনার নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ক্যাথেরিন অ্যাস্টন কায়রোতে ইসলামপন্থীদের সঙ্গে বৈঠক করার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ করে সংগঠনটি। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.