নাটোরে কাল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভর সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে নাটোর জেলা বিএনপি।
যুবলীগের এক নেতাকে গুলি করার অভিযোগে গতকাল শনিবার রাতে নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকার নিজ বাসা থেকে রুহুল কুদ্দুস ও দলের আরও তিন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ রোববার ভোর থেকে নাটোরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছে। বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
নাটোর থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১১টায় রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের বাসার সামনে বিএনপি ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশের পিঠে ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি দেওয়ান শাহীনের কানে গুলি লাগে।
এই ঘটনার পরপরই পুলিশ রুহুল কুদ্দুসের বাসা ঘিরে ফেলে। রাত সোয়া ১২টায় সদর সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশ তাঁর বাসার ভেতরে ঢোকে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁর বাগবিতণ্ডা হয়। রাত একটা পাঁচ মিনিটে পুলিশ রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, বিএনপিকর্মী আসলাম, আহমেদুল ও শামীমকে আটক করে সদর থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের যুবলীগ নেতা পলাশকে গুলি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে আজ বেলা ১১টায় দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। সেখানে আগামীকাল হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিক চিকিত্সা শেষে আজকের এ সংবাদ সম্মেলনে দেওয়ান শাহী উপস্থিত ছিলেন।
এ গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ ভোর থেকে শহরের হরিশপুর, মাদ্রাসামোড়, বনবেলঘরিয়া এলাকায় বেশ কিছু মোটরযান ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছিল।
যুবলীগ নেতা পলাশ বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আছেন।
নাটোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, ‘যুবলীগের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতা দুলুকে (রুহুল কুদ্দুস তালুকদার) হত্যা করার জন্য বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার না করে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে।’
আমিনুল হক আরও বলেন, ‘যুবলীগের ছেলেরা গোলাগুলি করতে গিয়ে নিজেরা আহত হয়েছে। তাদের ওপর আমরা হামলা করিনি।’
জেলা যুবলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের ছেলেরা আজকের (রোববার) পূর্বনির্ধারিত গণমিছিলের প্রচার শেষে দুলুর বাড়ির সামনে দিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর গুলিবর্ষণ করে।’
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আল মামুন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.