সিক্স থেকে এইটে উঠতেই ঝরে পড়লো ২ লাখ ১৭ হাজার

বিনামূল্যে বই সরবরাহ বা প্রায় দু’দশক ধরে চলে আসা উপবৃত্তি কোনো কিছুই ঠেকাতে পারেনি শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া। ক্লাস সিক্স থেকে এইটে উঠতে উঠতেই ঝরে পড়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার শিক্ষার্থী।

সম্প্রতি ডেইলিএডুকেশনডটনেটের এক রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ বছরের জেএসসি পরীক্ষার্থীরাই প্রথমবারের মতো চালু করা পঞ্চম শ্রেণি পড়া শেষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বসেছিলো ২০০৯ সালে। ওই বছর মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ৫ম শ্রেণি সমাপনী পরীক্ষায় বসতে হয়নি।

তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৪৬৫ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ১৬ লাখ ২০ হাজার ৫৪ জন শিক্ষার্থী। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হয়েছিলো। নতুন ফ্রি বই নিয়ে ও উপবৃত্তি নিয়ে ক্লাস চালিয়ে যাবার কথা থাকলেও সেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবারের জেএসসি পরীক্ষায় নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছে ১৪ লাখ দুই হাজার ৬৬৬ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ সিক্স থেকে এইট –এই তিন বছরে ঝরে পড়েছে দুই লাখ ১৭ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী।
তবে নিয়মিত, অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন মিলিয়ে এবারে জেএসসিতে মোট পরীক্ষার্থী ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৫ জন।

আগামী ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে জেএসসি পরীক্ষা ২০১২। শেষ হবে ১৫ নভেম্বর। স্কুল পড়ুয়া অষ্টম শ্রেণি শিক্ষার্থীদের যে পাবলিক পরীক্ষায় বসতে হয় তার নাম জেএসসি আর মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়াদের পরীক্ষার নাম জেডিসি।

কয়েকটি বিদেশি অর্থলগ্নীকারী ও দাতা সংস্থার পরামর্শে ২০১০ সালে সরকার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ও অভিন্ন প্রশ্নপত্রে এ পরীক্ষা চালু করে।

এর আগে অর্থলগ্নীকারী বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে ২০০৩ সাল থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপজেলাভিত্তিক মূল্যায়ণ পরীক্ষা হতো। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ওই পরীক্ষা হয়। প্রতিবছর অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হতো ১০০ নম্বরের পরীক্ষা, পাস নম্বর ছিলো ২৯। বাংলা, ইংরেজি ও অংক থেকেই বেশি প্রশ্ন আসতো। কী কী যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতো তা খতিয়ে দেখাই নাকি ওই পরীক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো। ওই পরীক্ষা চালু করতে দাতারা সাবেক শিক্ষাসচিব মোহাম্মদ শহীদুল আলমকে ব্যবহার করেছিলো বলে জানা গেছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অবশ্য শুরু থেকেই সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে আসছেন যে, এ পরীক্ষা চালু করার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে, মান উন্নীত হবে, ড্রপ আউট কমবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

No comments

Powered by Blogger.