স্যান্ডির পর স্বাভাবিক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রলয়ংকরী হারিকেন স্যান্ডির কারণে দুই দিন আমেরিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চল স্থবির থাকার পর বুধবার আবার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু হতে শুরু করেছে। নিউ ইয়র্কে বিমানবন্দরগুলো চালু হয়েছে। খোলার অপেক্ষায় আছে সরকারি অফিস-আদালত, বিদ্যালয় ও নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ।

অনেক বাড়িঘরে এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং নিউইয়র্কের সাবওয়েগুলোও বন্ধ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরো কয়েক দিন এ অবস্থা চলবে বলে।

কয়েকটি রাজ্যজুড়ে এখনো অন্ধকারে রয়েছেন ৮২ লাখ মানুষ। নিউ জার্সিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝড়ের কারণে প্রচারাভিযান বাতিল করে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিউ জার্সির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।
স্যান্ডির কবলে পড়ে ৪৬ জন মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কেবল নিউ ইয়র্কেই মারা গেছেন ২২ জন।

ঝড়ের পর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ৩০ থেকে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকাগুলোর মধ্যে ব্রুকলিনের নিম্নাঞ্চল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। দুর্যোগের ঘনঘটা শুরু হওয়ার পরই তাদের অধিকাংশই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যান্য এলাকায়ও বাংলাদেশীরা নিরাপদে আছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বুধবার সকাল থেকেই জ্যামাইকা ও জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশী মালিকানাধীন দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। তবে দোকানে খুব একটা ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কারণ রাস্তা বন্ধ থাকায় নগরীর সব জায়গা থেকে এখনো লোকজন আসতে পারছেন না।

নগরজীবন স্বাভাবিক করতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ঘূর্ণির প্রচণ্ডতায় এলোমেলো হয়ে যাওয়া নগরীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষত সাবওয়ে ও বাস সার্ভিস পুরোপুরি চালু না হলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে বলা যাবে না।

এদিকে ঈদ করার জন্য অনেক বাংলাদেশী নিউ ইয়র্কের বাইরে গেলেও স্যান্ডির কারণে ফিরে আসতে পারছেন না। বাফেলো থেকে নঈম উদ্দিন জানান, ঈদের আগের দিন পরিবার নিয়ে নিউ ইয়র্ক থেকে বাফেলো গিয়েছিলাম। যান চলাচল বন্ধ থাকায় ফিরতে পারছি না।
সীমিত কয়েকটি বিমান চলাচলের জন্য নিউ ইয়র্ক এলাকার প্রধান তিনটি বিমানবন্দরের মধ্যে জেএফকে ও নিউ ইয়র্ক লিবার্টি বিমানবন্দর দুটি বুধবার চালু হয়েছে।

এর আগে ১৮৮৮ সালে দুই দিনের জন্য নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ ছিল। মেট্রোপলিটন ট্রানজিট অথরিটির (এমটিএ) প্রধান জোসেফ লোটা জানিয়েছেন, নিউইয়র্কের বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থাপনা ১০৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

এ সাবওয়ে কখন চালু হবে তার কোনো নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করতে পারেননি নিউ ইয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ।

সাবওয়ে অচল হলেও সচল হয়েছে ট্রাম ও ফেরি সার্ভিস। তবে নিউ ইয়র্কের বেশির ভাগ সেতুই এখনো বন্ধ রয়েছে।

নিউ জার্সির গভর্নর ক্রাইস ক্রিস্টির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ওবামা অঙ্গরাজ্যটির ক্ষয়-ক্ষতি পরিদর্শনে যাচ্ছেন। দুর্যোগ সামাল দেয়ার জন্য ওবামার যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন রমনির একনিষ্ঠ সমর্থক রিপাবলিকান ক্রিস্টি।

No comments

Powered by Blogger.