হামজাসহ পাঁচজনকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ

লন্ডন হাইকোর্ট সবুজ সংকেত দেওয়ার পর গতকাল শনিবার মিসরীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা আবু হামজা আল-মাসরিসহ পাঁচজনকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করেছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। হামজাকে বহনকারী বিমানটি গতকাল শনিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রে পেঁৗছেছে।


ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে এ কথা জানিয়েছেন। পাঁচজনকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে এ নিয়ে আট বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের নিষ্পত্তি হলো।
হামজা বাদে বাকিরা হলেন_বাবর আহমাদ, সৈয়দ তালহা আহসান, আদেল আবদুল বারি ও খালেদ আল-ফাওয়াজ। তাঁদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন অঙ্গরাজ্যে আল-কায়েদা ধাঁচের জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপনের পরিকল্পনা, ধর্মের নামে আফগানিস্তানের যুদ্ধ শুরু ছাড়াও ১৯৯৮ সালে ইয়েমেন থেকে ১৬ জন পশ্চিমা নাগরিককে অপহরণে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে না পাঠানোর বিষয়ে বিবাদিদের আবেদনের পক্ষে-বিপক্ষে গত তিন দিন ধরে লন্ডন হাইকোর্টে শুনানি চলে। সব কিছু খতিয়ে দেখার পর গত শুক্রবার হাইকোর্টের কুইন্স বেঞ্চের বিচারক স্যার জন থমাস ও বিচারক অসলে পাঁচজনের আবেদন খারিজ করে দেন এবং তাঁদের দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে ওই পাঁচজনের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হলে তাঁরা ন্যায়বিচার পাবেন না। এ জন্য তাঁদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে না পাঠানোর জন্য ইউরোপীয় কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের (ইসিএইচআর) কাছে আবেদন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ইসিএইচআর গত সপ্তাহে তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর লন্ডন হাইকোর্ট একই রায় দিলেন।
চিকিৎসার কারণ দেখিয়ে আবু হামজাকে দেরিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানোর আবেদন করা হয়েছিল আদালতে। হামজার আইনজীবীরা বলেন, 'দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকায় তাঁর মানসিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এ অবস্থায় তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো উচিত হবে না। এ ছাড়া মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁর যথাযথ চিকিৎসা নাও করতে পারে।' বিচারক জন থমাস বলেন, 'হামজাকে যুক্তরাষ্ট্রেও চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। যত শিগগির হামজা বিচারের মুখোমুখি হবেন, ততই তাঁর জন্য মঙ্গল।'
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে জানান, মনিবার পূর্ব ইংল্যান্ডের সাফোক কাউন্টির মিলডেনহল বিমান ঘাঁটি থেকে দুটি বিমান ওই পাঁচজনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা করেছে। ইতিমধ্যে একটি বিমান যুক্তরাষ্ট্রে পেঁৗছেছে।
আবু হামজাকে নিউ ইয়র্কের মহানগর সংশোধনী কেন্দ্রে রাখা হবে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে হাজির করার কথা ছিল।
২০০৪ সালে ব্রিটিশ পুলিশ হামজাকে গ্রেপ্তার করে। এর পর থেকে তিনি সেখানেই কারাবন্দি ছিলেন। প্রত্যর্পণের পর এখন যুক্তরাষ্ট্রে হামজা ও তাঁর সহযোগীদের বিচার হবে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.