আগের তিন ফাইনাল by সোলায়মান

ভারত, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের পর কে? শ্রীলঙ্কা, না ওয়েস্ট ইন্ডিজ? আজ কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে যে দলই জিতুক না কেন, নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখবে ২০ ওভারের বিশ্বকাপ। নতুন চ্যাম্পিয়ন নিয়ে ভাবনার আগে চলুন একবার চোখ বুলিয়ে নিই আগের তিন ফাইনালে।


২০০৭ ভারত-পাকিস্তান
ভারতের ঐতিহাসিক জয়
মিসবাহ-উল-হকের স্কুপ শর্ট ফাইন লেগে শ্রীশান্তের হাতে আশ্রয় নিতেই উল্লাসে মাতল ভারত। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে লেখা হলো ইতিহাস। ৫ রানে জিতে ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট সংস্করণের প্রথম বিশ্বকাপটা নিজেদের করে নিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ১৫৮ রান। শেষ ওভারে ১৩। উইকেটে শেষ জুটি থাকলেও ব্যাটসম্যানদের একজনের নাম মিসবাহ হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল পাকিস্তান। যোগিন্দর শর্মার প্রথম ২ বল থেকে ৭ রান এলে স্বপ্নটা প্রায় সত্যিই হয়ে যাচ্ছিল। ৪ বলে ৬ রান, ওই সময়েই মিসবাহর সেই শট।
৭৭ রানে ৬ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে টেনে তুলেছিলেন মিসবাহই। ৪ ছক্কায় ৩৮ বলে ৪৩ রানের ধীরস্থির ইনিংসটাতেই জীবন পেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিসবাহ ‘ভিলেন’ই। ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা ইরফান পাঠান। গৌতম গম্ভীরের ৫৪ বলে ৭৫ ও রোহিত শর্মার ১৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস দুটিই ভারতকে এনে দেয় ১৫৭ রান।।

২০০৯ পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা
এবার জিতল পাকিস্তান
ক্রিকেট-তীর্থ লর্ডসের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সহজেই জিতল পাকিস্তান। প্রতিপক্ষের ১৩৮ রানকে ইউনুস খানের দল টপকে গেল ৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই। ওপেনার কামরান আকমলের ২৮ বলে ৩৭ রানই পাকিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়। শাহজাইবের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ৭ ওভারে ৪৮ রান তোলার পরই সাজঘরে ফেরেন আকমল। ১৫ রান পর শাহজাইব আউট হলেও আফ্রিদি ও শোয়েব মালিক মিলে সারেন বাকি কাজটুকু। তিনে নামা আফ্রিদি প্রথম ১৯ বলে ১৭ রান করেন কোনো চার-ছয় ছাড়াই। অবশ্য পরের ২১ বলে ২ চার ও ২ ছয়ে ৩৭ রান করে সেটা পুষিয়ে নেন। ৪০ বলে ৫৪ রান ও বোলিংয়ে ১ উইকেট, ম্যাচসেরা আফ্রিদিই।
টস জিতে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা ০ রানে প্রথম ও ২ রানেই হারায় দ্বিতীয় উইকেট। ৭০ রানে ৬ উইকেট হারানো দলটিকে ১৩৮ রান এনে দেয় সাঙ্গাকারা ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের জুটি। সপ্তম উইকেটে সাত ওভারে ৭০ রান যোগ করে এই জুটি। সাঙ্গাকারা ৬৪ রান করেন ৫২ বলে।

২০১০ ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া
ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়
প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপ জিতল ক্রিকেটের জনকেরা। ক্রেগ কিসওয়েটার ও কেভিন পিটারসেনের হাত ধরেই আসে ৭ উইকেটের সহজ জয়। দ্বিতীয় উইকেটে এই জুটির ১১১ রানই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে। লক্ষ্য ছিল ১৪৮ রান। ৭ রানে ওপেনার মাইকেল লাম্বকে হারানোর পরই ক্রিজে আসেন টুর্নামেন্ট-সেরা পিটারসেন। মাত্র ১১ ওভারেই ১১১ রান যোগ করার পর আউট কেপি। ৩১ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রান তাঁর, ম্যাচসেরা কিসওয়েটার ৬৩ রান করেন ৪৯ বলে। তাঁর ইনিংসে ৭টি চার ও ২টি ছয়। ৩ রানের ব্যবধানে দুজনই আউট হলেও অধিনায়ক পল কলিংউড ৫ বলে ১২ রান করে ১৮ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ শেষ করে দেন।
অস্ট্রেলিয়ার সূচনাটা হয়েছিল খুবই বাজে। ৮ রান তুলতে ৩ উইকেট নেই। উইকেট পড়েছে প্রথম ৩ ওভারের প্রতিটিতেই। প্রথম রান নিতে গিয়ে রানআউট হতেও হতেও বেঁচে যাওয়া অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ডেভিড হাসিকে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারিটা আসে পঞ্চম ওভারে তাঁর ব্যাট থেকেই। ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন ক্লার্ক। প্রথম ৫০ রান করতে ১০.৩ ওভারে লাগে অস্ট্রেলিয়ার। তবে ডেভিড হাসি, ক্যামেরন হোয়াইট ও মাইক হাসি শেষ ৫৭ বলে দলকে এনে দেন ৯৭ রান।

No comments

Powered by Blogger.