তানভীরকে ধরতে ব্যর্থ অভিযান

হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদকে ধরতে র‌্যাবের অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে আজ রোববার ভোর ছয়টা পর্যন্ত র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৪-এর একটি দল সাভারে হলমার্কের কারখানায় অভিযান চালায়।


র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে র‌্যাবের দলটি রাত দুইটার দিকে সাভারে হলমার্কের কারখানায় যায়। কিন্তু ভোর ছয়টা পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, হলমার্কের ওই এক সীমানার ভেতরে অনেক জমি ও স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্য থেকে তাঁকে খুঁজে বের করা সত্যিই দুরূহ।
র‌্যাব-৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর আহমদ বলেন, হলমার্কের সীমানায় ঢোকার প্রধান ফটকে গিয়ে দেখা যায়, দুটি পিকআপ ভ্যান আড়াআড়ি করে ফেলে রাখা হয়েছে। পিকআপ দুটি সরাতে পাঁচ-ছয় মিনিট সময় লাগে। এরই মধ্যে হঠাত্ দুটি পালসার মোটরসাইকেল দ্রুতবেগে ভেতরে ঢুকে যায়। এরপর র‌্যাবের দলটি ভেতরে ঢুকে তানভীর মাহমুদ যে ভবনে থাকেন সেখানে হানা দেয়। ভবনের প্রবেশদ্বার পুরু ইস্পাত-কাঠ দিয়ে তৈরি। প্রায় ১০ মিনিট কথা বলে, অনুরোধ করার পরও ভেতর থেকে দরজা খোলা হয়নি। এরপর র‌্যাবের সদস্যরা দরজা ভেঙে ভেতরে তিন তরুণীকে দেখতে পান। তাঁরা জানান, তানভীর মাহমুদ পালিয়ে গেছেন। ওই বাসার বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালায় র‌্যাব। তানভীর মাহমুদের বাড়িতে আমোদ-ফুর্তির সবরকম উপকরণই রয়েছে।
র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান জিয়াউল আহসান বলেন, ভেতরে অন্তত তিন থেকে সাড়ে ৩০০ আনসার সদস্য পাহারা দেন। হলমার্ক গ্রুপ সাভারের ওই এলাকার প্রায় একটা গ্রাম পুরো দখল করে রেখেছে। র‌্যাব আসার খবর পেয়েই তানভীর গাড়িতে করে ওই এলাকায় ঢুকে পড়েন।
হলমার্কের সীমানার ভেতরে ঢুকে কিছুটা বিস্মিত জিয়াউল আহসান বলেন, সেখানে হলমার্কের নিজস্ব নিরাপত্তা (লাঠিয়াল) বাহিনী, টহল রয়েছে। টহল পিকআপের গায়ে লেখা রয়েছে ‘হলমার্ক পেট্রোল’। এমনকি সেখানে তাঁদের নিজস্ব ফায়ার স্টেশনও রয়েছে।
র‌্যাবের কর্মকর্তারা বলেন, ওখানে বেশ কিছু লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রত্যেকেই জানান, তাঁরা গত পরশু দিন এখানে কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে র‌্যাব সদস্যরা জানতে পারেন, তানভীরের পরিকল্পনা ছিল র‌্যাবের সদস্যরা ঢুকলে মাইকে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিত্কার করে আনসার সদস্য ও লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে তাদের প্রতিহত করার। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারেননি তিনি।
জিয়াউল আহসান বলেন, র‌্যাব যখন ঢোকে, তখন ভেতরের সব বাতি নেভানো ছিল। পরে র‌্যাবের সদস্যরা গিয়ে জেনারেটর কক্ষ থেকে বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, তানভীরকে ধরতে র‌্যাবের অভিযান চলবে।

No comments

Powered by Blogger.