ইরানি চলচ্চিত্রের পাঁচ সুন্দরী মেয়ে

‘আমি রুপ নগরের রাজকন্য রুপের জাদু এনেছি/ ইরান তুরান পার হয়ে আজ তোমার দেশে এসেছি।’
অথবা-
‘নাচে নাচে ইরানি মেয়ে, নাচে ইরানি মেয়ে/ মরু বালুকা হরষে আকুল/ নাচে নাচে ইরানি মেয়ে, নাচে ইরানি মেয়ে।’

পারস্য মেয়েদের সৌন্দর্য্য পৃথিবী বিখ্যাত। শুধু পারস্য কবিতা, গানেই না বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সাহিত্যকর্মে নানাভাবে ইরানি মেয়েদের সৌন্দর্য্য বর্ণিত হয়েছে। কঠোর ইসলামী অধ্যুষিত দেশ হলেও সেখানকার চলচ্চিত্রে নিজের দেশের ঐহিত্য মেনেই ইরানি মেয়েরা নিজেদেরকে সাবলীল করে তুলেছেন। তাদের সৌন্দর্য্য ও অভিনয় দক্ষতার ফলে অসাধারণ হয়ে উঠেছে ইরানি চলচ্চিত্র। ইরানি চলচ্চিত্র আর্ন্তজাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে। চলুন আজ কয়েকজন জনপ্রিয় ইরানি অভিনেত্রীর সঙ্গে পরিচিত হই।
গুলশিফতে ফারাহানি: ১৯৮৩ সালের ১০ জুলাই গুলশিফতে জন্মগ্রহণ করেন।  ‘বডি অব লাইস’ ছবির অভিনেত্রী গুলশিফতে ছয় বছর বয়স থেকেই থিয়েটারে অভিনয় করেন। রিডলি স্কট পরিচালিত ‘বডি অব লাইস’ ছবির মোহময়ী অভিনেত্রী গুলশিফতেই প্রথম ইরানি অভিনেত্রী হিসেবে হলিউড প্রোডাকশনে কাজ করেন। ১৪ বছর বয়সে ‘দ্য পিয়ার ট্রি’ ছবির মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। প্রথম ছবিতেই গুলশিফতে ফাজর ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনয় শিল্পীর পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর ইরানের ছবিতে নিজেকে উল্লেখযোগ্য করে তোলেন।

২০০৭ সালে দারিয়ুস মেহেরজু পরিচালিত ও গুলশিফতে অভিনীত বিতর্কিত ছবি ‘সান্তুর’ ইরানে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই অভিনেত্রী পিয়ানো থেকে শুরু করে আরো অনেক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে সক্ষম। পড়ালেখা করেছেন মিউজিক স্কুলে। বাস করছেন ফ্রান্সের প্যারিসে।

নিকি কারিমি: ‘দ্য হিডেন হাফ’ ছবির অভিনেত্রী ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। নিকি ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত একজন অভিনেত্রী ও পরিচালক। দারিয়ুস মেহেরজু পরিচালিত ‘সারা’ চবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। এই ছবির জন্যে নিকি ১৯৯২ সালে ‘সান সাবাস্তিয়ান’ ও নান্তেস ফিল্ম’ ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। চলচ্চিত্র শিল্পে কাজ শুরু পর থেকে প্রায় ত্রিশটির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন নিকি। নিকি কারিমি অভিনীত ওয়ান নাইট, আনসার্টেন রিগার্ডস্, এ ফিউ ডে’জ লেটার, টু হ্যাভ আর নট টু হ্যাভ- সহ বহু ছবি আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।

লেয়লা হাতেমি: ‘এ সেপারেশন’ ছবির অভিনেত্রী লেয়লা হাতেমি হাইস্কুল শেষ করে পড়ালেখা করতে সুইজারল্যান্ডে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান। দুই বছর পর তিনি তার ট্র্যাক চেঞ্জ করে ফ্রেঞ্চ সাহিত্য নিয়ে পড়তে শুরু করেন। পড়ালেখা শেষ করে লেয়লা ইরানে ফিরে আসেন। পরিচালক দারিয়ুস মেহেরজু পরিচালিত ‘ লেয়লা’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পে যুক্ত হন। ১৯৯৯ সালে সহকর্মী আলি মোসাফাকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির ৫ ও ৪ বছর বয়সী দুই শিশু সন্তান আছে। ২০১১ সালের বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে লেয়লা হাতেমি সম্মানজনক সিলভার বিয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।

তারানে আলিদুস্তি: ‘অ্যাবাউট এলি’ ছবির অভিনেত্রী তারানেহ ১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তারানেহর বাবা ইরানের নামকরা ফুটবল খেলোয়াড়। ২০০০ সালে অভিনয় শেখার স্কুলে ভর্তি হন। ২০০২ সালে ‘আই অ্যাম তারানা ,আই অ্যাম ফিফটিন’ ছবিতে অভিনয় করে নিজেকে ইরানের চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারানের প্রথম ছবিই লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিলভার লেপার্ড অর্জন করে। বিউটিফুল সিটি, ফায়ারওয়ার্ক ওয়েন্সডে, ডাউট সহ বহু জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন।

হেদাই তেহরানি: ফায়ারওয়ার্কস ওয়েন্সডে ছবির অভিনেত্রী হেদাই তেহরানি ১৯৯৫ সালে রুজ-ই-ভাগ-ই’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে ‘দ্য বেটার নোন ফেস’ ও ‘সোলতান’ ছবির মাধ্যমে রাতারাতি তারকা খ্যাতি পেয়ে যান।

No comments

Powered by Blogger.