শিকলবন্দি সালেহা-নির্যাতকদের শাস্তি হোক

সম্পত্তির লোভ বড় ভয়ানক। কিন্তু এ লোভ চরিতার্থ করতে মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে? মানুষের লোভের যেমন সীমা-পরিসীমা নেই, তেমনি হয়তো নির্মমতারও অবধি নেই। সম্পত্তি দখলের জন্য নিকটাত্মীয়দের নির্মমতা কত দূর বিস্তৃত হতে পারে তার একটি উদাহরণ বরিশালের সালেহা বেগম।


জমি আত্মসাতের জন্য নিকটাত্মীয়রা সহায়-সম্বলহারা বৃদ্ধা সালেহাকে দিনের পর দিন শিকলবন্দি করে রেখেছিল। জমির পরিমাণ খুব বেশি নয়, মাত্র ১৫ শতাংশ। এ জমিতে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে ঘর বেঁধে থাকতেন তিনি। অভাবের সংসারে নিত্যসংগ্রাম করেই টিকে থাকার উপায় তার। কিন্তু এতটুকুও সইল না শ্বশুরবাড়ির লোকদের। তারা সালেহাকে প্রথমে জমির জন্য চাপ দিল। যখন চাপে কাজ হলো না, তখন বেছে নিল নির্মম নির্যাতনের পথ। হয়তো এ নির্যাতনের কাছেই পরাস্ত হতেন বৃদ্ধা। হয়তো লোকচক্ষুর অন্তরালে মৃত্যুর ভাগ্যও বরণ করতে হতো তাকে। কিন্তু দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের সহায়তায় প্রথমে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন তিনি। বিস্ময়কর হলেও সত্য, শিকলবন্দি সালেহাকে দেখেও তার শিকল খোলার বা তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি পুলিশ। বরং তাকে আদালতের রাস্তা দেখিয়ে তারা কর্তব্য সেরেছে। নিরুপায় সালেহা বরিশালে আদালতে এসে জানিয়েছেন তার দুর্ভাগ্যের কথা। আশার কথা, আদালত তাকে বিমুখ করেননি। তার আরজি শুনেছেন। তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তের নির্দেশও জারি হয়েছে। একজন অসহায় বৃদ্ধার প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণের জন্য অভিযুক্তদের অবশ্যই বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। তাদের উপযুক্ত শাস্তিও নিশ্চিত হওয়া উচিত। পাশাপাশি, নির্যাতিত মানুষ যাতে থানার কাছ থেকে প্রত্যাশিত সেবা পায় তাও নিশ্চিত হওয়া দরকার। এখন সবার সহযোগিতায় সালেহা বেগম সুবিচার পাবেন বলে আমরা আশা করি।
 

No comments

Powered by Blogger.