মিজানুর রহমানের প্রশ্ন-গুলিটা এমন জায়গায় কেন লাগে, যাতে আহত হয় না

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘র‌্যাবের প্রশিক্ষণে কোথাও ত্রুটি রয়েছে। নয়তো তারা কাউকে যখন ধরতে যায়, তখন অভিযুক্ত অপরাধী মারা যায় কেন? গুলিটা এমন জায়গায় কেন লাগে, যাতে সে আহত হয় না?’


র‌্যাবের প্রশিক্ষণের এই ‘ঘাটতি’ গভীরভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে অভিমত দেন মিজানুর রহমান।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে মানবাধিকারবিষয়ক এক আঞ্চলিক কর্মশালার সমাপনী অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এএলআরডি) ও ইনস্টিটিউট ফর মোটিভেটিং সেলফ এমপ্লয়মেন্ট ইন্ডিয়া (আইএমএসই) যৌথভাবে ‘মানবাধিকার, খাদ্য ও ভূমিতে মানুষের অধিকার’ শীর্ষক দুই দিনের এই কর্মশালার আয়োজন করে।
মানবাধিকার কমিশন অনেকবারই র‌্যাবের ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে কথা বললেও কেন তা বন্ধ হচ্ছে না—সাংবাদিকেরা এই প্রশ্ন করলে মিজানুর রহমান কমিশনের সীমাবদ্ধতার কথা বলেন। তিনি বলেন, জনবলের অপ্রতুলতার কারণে কমিশনের পক্ষে র‌্যাবের সব ‘হত্যাকাণ্ডের’ তদন্ত করা সম্ভব হয় না। র‌্যাবের সদস্যরা যখন কাউকে গুলি করেন, তখন কী ধরনের পরিস্থিতি ছিল, কোন ধরনের অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়, ওই অস্ত্র কার বা যারা ক্রসফায়ারে মারা যায়, তাদের কাছে আদৌ অস্ত্র ছিল কি না—এ ধরনের বিষয় খতিয়ে দেখার মতো কারিগরি জ্ঞান মানবাধিকার কমিশনের নেই।
মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, র‌্যাবের যদি মানবাধিকারবিষয়ক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়, তাহলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের সেই প্রশিক্ষণ দিতে রাজি আছে।
চলমান কড়াইল বস্তি উচ্ছেদের ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা না করে কাউকে বস্তি থেকে উচ্ছেদ করা মানবাধিকার লঙ্ঘন।
সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা প্রসঙ্গে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি সে দেশের সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে। আশা করি, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ভবিষ্যতে শূন্যের কোঠায় পৌঁছাবে।’
কর্মশালার সর্বশেষ অধিবেশনে আদিবাসীবিষয়ক আলোচনা পর্বে জাতীয় সংসদের আদিবাসীবিষয়ক ককাসের সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সমস্যা সমাধানের জন্য আইন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমলাদের কারণে তা অনুমোদন করা যাচ্ছে না।
কর্মশালা শেষে গৃহীত ঢাকা ঘোষণায় কৃষিজমি রক্ষা, সবার জন্য খাদ্য ও ভূমির অধিকার নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।
সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য কাজী রিয়াজুল হক, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র শীল প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.