গাউছিয়ায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

ঈদকে সামনে রেখে দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি কাপড়ের বাজার গাউছিয়া মার্কেটসহ বড় বড় বিপণিবিতানগুলোতে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। গাউছিয়া মার্কেটে রয়েছে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়। ধনী, মধ্যবিত্ত ও  নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো নিজেদের সাধ্যমত কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গাউছিয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী হক সুপার মার্কেট, তাঁত বাজার মার্কেট, রেদোয়ান টাওয়ার মার্কেট, আউয়াল মার্কেটে বেচাকেনা চলছে ধুমছে। ছোট বড় সকলের পছন্দ মতো কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। এবার বাজার দখল করেছে ইন্ডিয়ান বাংলা সিরিয়ালের নায়িকাদের পোশাক। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা এলাকা থেকে আগত ক্রেতারা গাউছিয়া মার্কেট থেকে পাইকারি দরে ক্রয় করছেন যাকাতের শাড়ি, লুঙ্গি। এখানে চাহিদা মোতাবেক শাড়ি লুঙ্গি থাকায় এবং পাইকারি দরে পাওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন এ মার্কেটে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এ বেচাকেনা। দোকানীরাও ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদামত শাড়ি, লুঙ্গি দোকানে উঠিয়েছে। ক্রেতাদের জন্য রয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। এ ছাড়াও পুরুষ ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মহিলা কাপড় ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার পিস শাড়ি, লুঙ্গিসহ কাপড় পাইকারি দরে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলা এলাকায় খুচরা বিক্রি করছে। শাড়ি, লুঙ্গির পাশাপাশি ক্রয় করছেন পাঞ্জাবি, বেডসিট, ছোটদের পাগলু, ঝিলিক, কিরণমালা, বজ্রমালা, কটকটি, সোহানা, আইপিয়েল, লেহেঙ্গাসহ হরেক রকম রেডিমেট কাপড় ও থ্রি-পিস। তবে শাড়ি আর থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে বিত্তশালীদের ভিড় বেশি। ঐতিহ্যবাহী নোয়াপাড়ার জামদানি, জর্জেট কাতান, এসকে জর্জেট, সিমার জর্জেট, স্পিরিং কাতান, টাঙ্গাইলের বালুরচুরি ও রাজশাহী সিল্কের চাহিদাও রয়েছে। বসে নেই মধ্যবিত্তরাও। চেষ্টা করছেন তাদের সাধ্যমত কেনাকাটার। ঈদের পছন্দের পোশাকটি বেছে নিতে পুরো মার্কেট চষে বেড়াচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতিযোগিতা দিয়ে দোকানিরাও নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক ও ঈদ সামগ্রী তুলেছেন। জুতার দোকানগুলোতেও ভিড়ের কমতি নেই। সাইজ ও পছন্দের জুতা বেছে নিতে ক্রেতারা চষে বেড়াচ্ছেন দোকানগুলোতে। অন্যদিকে ফুটপাতগুলো ব্যস্ত নিম্নবিত্তদের কেনাকাটার ভিড়ে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফুটপাতগুলোতেও চলছে ধুমচে বেচাকেনা। ক্রেতাদের দাবি ফুটপাত থাকাতে তারা সুবিধামত ঈদ পোশাক ক্রয় করতে পারছেন। ভিড় রয়েছে ইলেকট্রনিক্স দোকানগুলোতেও। ঈদকে সামনে রেখে টিভি, ফ্রিজসহ ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ক্রয় করছেন ক্রেতারা। অন্য দিকে ভিড় পড়েছে কসমেটিকস দোকানগুলোতে। তরুণী ও যুবতীরা নিজেদের সাজাতে ক্রয় করছেন বিভিন্ন রকমের কসমেটিকস সামগ্রী।
এদিকে গার্মেন্টসসহ শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের বেতন ভাতা না দেয়ার কারণে তারা এখনও ঈদ পণ্য ক্রয় করতে পারেনি। কুমিল্লার খুচরা মহিলা কাপড় ব্যবসায়ী হাজেরা খাতুন বলেন, ভাই গাউছিয়া মার্কেটে মোকাম করতে আইতাম প্রতি মঙ্গলবারে। ঈদে বেছাকিনা ভালা বইলা আজও মোকাম করতাছি। লিপি বেনারশি শাড়ি বিতানের মালিক দুলাল মিয়া জানান, শাড়ির দোকানে বেচাকেনা ভাল। তবে জাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গির চাহিদা বেশি। ব্লাক কেসের মালিক সানাউল্লাহ মান্নান সানী জানান, ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের পোশাকের চাহিদা বেশি রয়েছে। তবে ক্রেতারা নতুন নতুন ডিজাইনের উপর ঝুঁকছে। তবে বেচাকেনা ভাল আছে। তিনি আরও বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা বেতন পায়নি। পেলে বেচাকেনা আরও বেড়ে যাবে। জুতা ব্যবসায়ী রফিক জানান, জুতার বেচাকেনা আছে মোটামুটি। তবে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে দুয়েক দিন পর থেকে। গাউছিয়া করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন, মার্কেটে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রেতারা নিরাপদে ঈদ পণ্য ক্রয় করছেন। এ ছাড়া উপজেলার তারাব, রূপসী, মুড়াপাড়া, কাঞ্চন, ভোলাব, হাটাব, বেলদীসহ ছোট ছোট হাটবাজারের দোকানগুলোতেও চলছে বেচাকেনা। এ বেচাকেনা চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।

No comments

Powered by Blogger.