নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করতে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি বিএনপির

টানা তিন মাস আন্দোলনে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করতে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। আজ দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সস্মেলনে বিএনপি মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি জানান। খালেদা জিয়ার নির্দেশে পেট্রোল বোমা হামলায় হয়েছে ক্ষমতাসীনদের এমন বক্তব্যের জবাবে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, পেট্রোল বোমা কারা মেরেছে আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া দরকার। সরকার বলছে বিএনপি পেট্রোল বোমা মেরেছে। বিএনপি বলছে, পেট্রোল বোমা মারার সঙ্গে বিএনপি জড়িত নয়। এই অবস্থায় আমাদের দাবি হচ্ছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত কমিটি করে প্রকৃতপক্ষে জড়িতদের চিহ্নিত করা। তিনি বলেন, বিএনপি কখনো নাশকতার সঙ্গে জড়িত ছিলো না। স্বাভাবিক তদন্ত হলে তদন্তকারীদের কাছ থেকে ন্যায়সঙ্গত তদন্ত আশা করা যাবে না। সেজন্য জাতিসংঘের অধীনে একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান দিয়ে তদন্ত চায় বিএনপি। তিনি আরও বলেন, সরকার নাশকতার জন্য বিএনপি নেত্রী হুকুম দিয়েছেন বলে তাকে দায়ী করছে এবং এর সঙ্গে বিএনপির নেতাদের অভিযুক্ত করা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপির বা তার কোনো নেতা পেট্রোল বোমা বা এই ধরনের কোনো নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয়। এই দল নাশকতায় নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আন্তর্জাতিক তদন্ত হলে নাশকতায় সত্যিকার অর্থে কারা জড়িত তা বেরিয়ে যাবে। তখন বিএনপি চেয়ারপারসনের কথার যথার্থতা প্রমাণিত হবে, এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চাই। কিন্তু আন্তর্জাতিক তদন্ত না করে যদি বিরোধী দল বা শীর্ষ নেতৃত্বকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালানো হয় গণতন্ত্রের জন্য তা ভালো হবে না। বিএনপি চেয়ারপরাসন খালেদা জিয়া- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একই বিন্তে দুটি ফুল আখ্যা দিয়ে ড. রিপন বলেন, তাদের দু’জনের একজন ঝড়ে গেলে করলে আরেকজন ঝড়ে যাবেন। একজনের বিনাশ ঘটলে, অন্যজনেরও বিনাশ ঘটবে। বিএনপির বিনাশ হলে আওয়ামী লীগেরও বিনাশ হবে আর আওয়ামী লীগের বিনাশ ঘটলে বিএনপিরও বিনাশ ঘটবে। ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটলে দেশে অশুভ শক্তির উত্থান ঘটবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. রিপন বলেন, এই উপলব্ধির জন্য তাকে স্বাগত জানাই। তবে এটা বলতে পারি, শুভ বা অশুভ নয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে অনিবার্যভাবে বিকল্প শক্তির উত্থান ঘটবে। তখন কারো কিছু করার থাকবে না।  বিএনপির মুখপাত্র বলেন, রাজনীতিবিদরা যদি রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে তবে বিকল্প শক্তি এসে তাদেও কাঠগড়ায় দাড় করালে তখন আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ থাকবে না। এজন্য ১/১১ থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনীতিবিদদেও প্রতি আহ্বান জানান তিনি।  সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে তার স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে জবাবে রিপন বলেন, এটি সরকারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে কি কারনে তাকে সরিয়ে দেওয়া হলো তা জনগণের কাছে স্পষ্ট করা উচিত। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান, এড. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.