উফায় জিনপিং ও পুতিনের বৈঠক: ‘চীন–রাশিয়া এক থাকলে সব সমস্যা উতরানো সম্ভব’

ব্রিকস ও এসসিও শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগের দিন বুধবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পুতিনের পক্ষ থেকে ঘোষণা এল, এ দুই দেশ এক থাকলে সব সমস্যাকে পরাস্ত করা সম্ভব। খবর এপি, এএফপি ও রয়টার্সের।
রাশিয়ার উফা শহরে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন। এতে অংশ নিচ্ছেন পুতিন ও জিনপিংয়ের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। বিশ্বের উঠতি পাঁচটি অর্থনীতির এই জোটকে আগে থেকেই ক্রেমলিন পাশ্চাত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবেই বিবেচনা করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমা অবরোধের জেরে অর্থনৈতিক চাপে পড়া রাশিয়া ব্রিকস-এর সঙ্গে সম্পর্ককে আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
অন্যদিকে চীনের সঙ্গেও নানা ইস্যুতে পাশ্চাত্যের মতপার্থক্য বাড়ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার ব্যবস্থায় কয়েকটি বড় ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনায় চীনের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলায় ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক ভাল নেই।
এমন প্রেক্ষাপটে উফায় চীনা ও রুশ প্রেসিডেন্টের মধ্যে ওই বৈঠক হল। বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে জিনপিংকে পুতিন বলেন, ‘আমরা অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যেসব বিষয় নিয়ে সমস্যার মুখোমুখি, সেগুলো সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবেই অবগত আছি। এ বিষয়ে সন্দেহ নেই যে, আমরা যৌথ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে সামনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবো। আমরা সব সমস্যার সমাধান করবো।’
রাশিয়ার উফা শহরে গতকাল ব্রিকসের সপ্তম শীর্ষ সম্মেলনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (বাঁয়ে) ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে (ডানে) স্বাগত জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার এই জোটের এবারের সম্মেলনে সিরিয়া সংঘাত, জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হুমকি এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে l ছবি: এএফপি
ব্রিকস সম্মেলন শুরুর আগেই উফায় জিনপিংয়ের পাশাপাশি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদি ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জুমার সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। গতকালই তাঁর বৈঠকের কথা ছিল ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে। সাংহাই কো-অপারেশন সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন রুহানিও। এদিকে রুশ অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, গ্রিসের ঋণ সংকটের বিষয়টি ব্রিকস সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে নেই। তবে ওই সংকট ইউরোজোনে যে প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কারণ, এটি সম্মেলনে অংশ নেওয়া সবার জন্যই ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতি বছর ব্রিকস বাণিজ্য মেলা আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন। ব্রিকস বিজনেস কাউন্সিলে দেওয়া এক ভাষণে এ প্রস্তাব করেন তিনি। এ সময় মোদি পাশ্চাত্যের প্রতি পরোক্ষ আক্রমণ করে আরও বলেন, ‘একতরফা অবরোধগুলো’ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ক্ষতি করছে। মূলত ইউক্রেন সংকট নিয়ে মস্কোর ওপর পাশ্চাত্যের অবরোধ আরোপের প্রতি ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.