সাত খুনে তারেক-আরিফ সরাসরি জড়িত :র‌্যাব-এর তদন্ত প্রতিবেদন

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জড়িত ছিলেন র‌্যাব-এর সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ ও আরিফ হোসেন। র‌্যাব-এর তদন্ত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। রোববার  এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আগামী ১০ই ডিসেম্বর হাইকোর্টে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে। বিচারপতি মো. রেজাউল হক এবং বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন উত্থাপন করা হবে। র‌্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে নজরুল ইসলামকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করে কাউন্সিলর নূর হোসেন। এ ঘটনার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ অপহরণ থেকে শুরু করে নদীতে লাশ ডোবানো পর্যন্ত লে. কর্ণেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও মেজর আরিফ হোসেন জড়িত ছিলেন। তবে লে. কমান্ডার এম এম রানা অপহরণ পর্যন্ত অংশ নিয়ে আংশিক জড়িত ছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাত জনকে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‌্যাবের এসআই পূর্ণেন্দ্র বালা, এবি আরিফ হোসেন, নায়েক নাজিম (ড্রাইভার), নায়েক দেলোয়ার (ড্রাইভার) ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সি, আব্দুল আলীম, আলামিন, তৈয়ব, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, আলামিন, হাবিলদার এমদাদ, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সৈনিক আসাদ, সার্জেন্ট এনামুল, এএসআই বজলু, হাবিলদার (ড্রাইভার) নাছির, সৈনিজ তাজুল পুরো সময় উপস্থিত ছিলেন। তদন্তে দেখা যায়, র‌্যাব ১১-এর অধস্তন সদস্যগণ ঘটনাপ্রবাহের প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের সরকারী দায়িত্ব মনে করে থাকতে পারেন। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে তারা প্রাণের ভয়ে ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে নিজেদের জড়িত রেখেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাত জনকে গত ২৭শে এপ্রিল অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। এরপর র‌্যাব ১১-এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়ার অভিযোগ করেন নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। ৫ই মে বিচারপতি মো. রেজাউল হক এবং বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চে স্বপ্রণোদিত হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে পুরো ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাকে চেয়ারম্যান করে সাত সদস্যের কমিটি হয়। অন্যদিকে, সেভেন মার্ডারে র‌্যাবের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর র‌্যাব ১১-এর সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্ণেল তারিক সাইদ মাহমুদ, মেজর আরিফ ও লে. কমান্ডার রানাকে অবসরে পাঠানো হয়। পরে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চের নির্দেশে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এরই মধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.