‘অন্ধের যষ্টি’ চুরি

অন্ধ পথশিল্পী রফিকুল ইসলাম (৪৫)। বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা চিটুয়ানোয়াপাড়া গ্রামে। আট মাস বয়সে টাইফয়েডে দৃষ্টিশক্তি হারান রফিকুল।
হাটে-মাঠে খঞ্জন আর মন্দিরা বাজিয়ে গান শোনান। ঘুরে ঘুরে মানুষকে গান শুনিয়ে যে কটা টাকা পেতেন, তা দিয়ে টেনেটুনে চলে স্বামী-স্ত্রীর সংসার। গত বুধবার রাতে সেই খঞ্জন ও মন্দিরা চুরি হয়ে গেছে। এখন আর গান শোনাতে পারছেন না রফিকুল। বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জন।
রফিকুল জানান, বুধবার রাতে উপজেলার সান্দিকোনাবাজার থেকে গান শুনিয়ে বাদ্যযন্ত্র দুটি এনে ঘরে রাখেন। বৃহস্পতিবার সকালে দেখেন সেগুলো আর নেই।
সান্দিকোনা গ্রামের সবুজ মিয়া নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রিত হিসেবে থাকেন রফিকুল। আশ্রিত কুঁড়েঘরের সামনে জলচৌকিতে বসে রফিকুল বলেন, ‘যন্ত্রডি চুরি কইরা আমারে ঠাইট মাইরা ফালাইছে। এহন আমি গান গাইয়াম কি দিয়া। আমি চলবাম কেমনে। যন্ত্রডি কিনতে গেলে এহন টেহা লাগব। আমি টেহা পামু কই।’
রফিকুল জানান, তিনি জালাল খাঁ, উকিল মুন্সী, সুনীল বাউলের গান ছাড়াও লালনগীতিসহ বিভিন্ন ধরনের লোকজ সংগীত করেন।
রফিকুলের স্ত্রী হাজেরা বেগম বলেন, ‘এই যন্ত্র দুইডাই ছিল আমাদের গিরস্তি। এহন যন্ত্রের লাইগ্যা তিনি শুধু কান্দেন। যন্ত্রডি চুরি অওনের পর থাইক্যা বাজারে গিয়া গানও গাইবার পারতাছে না। এহন কীভাবে চলবাম বুঝতাছি না।’

No comments

Powered by Blogger.