তামিম-ইমরুলের রেকর্ড জুটিতে বাংলাদেশের দিন

রেকর্ডের পেছনে ছুটতে গিয়ে প্রথম দিনই রেকর্ড। তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরি এবং রেকর্ড উদ্বোধনী জুটিতে চট্টগ্রামে প্রথম দিনটা একান্তই বাংলাদেশের হয়ে রইল। সকাল থেকে যদি বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে, তাহলে তৃতীয় টেস্টের সূচনা দেখে বলে দেয়া যায়, শেষটাও হবে মনোহর। প্রথমবার টানা তিন টেস্ট ম্যাচ জেতার লক্ষ্য নিয়ে কাল মাঠে নেমেছেন মুশফিকুর রহিমরা। বাংলাদেশ অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ১৯টি টেস্ট খেলতে নামা মুশফিক এমন স্মরণীয় দিনে উপহার পেলেন টস জয়ে। আগেরদিন জিম্বাবুয়ের হ্যামিলটন মাসাকাদজা বলেছিলেন, টস হবে ফ্যাক্টর। যদি তাই হয়, তাহলে বলে দেয়া যায়, এই ম্যাচের চিত্রনাট্য স্বাগতিকদের কথা মাথায় রেখেই লেখা হয়েছে। মুশফিকুরের প্রসন্ন মুদ্রাভাগ্য, টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত এবং জোড়া শতকের সহায়তায় প্রথমদিনে স্কোরবোর্ডে মাত্র দুই উইকেটে ৩০৩ রান জমা হওয়া তারই ইঙ্গিতবহ। প্রাক-ম্যাচ কথোপকথনে মুশফিকুর বলেছিলেন, এই ম্যাচ জেতাটাই তাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। চিত্রনাট্যকার হয়তো মুচকি হেসে দুটি বড় চরিত্র বরাদ্দ করলেন তামিম ও ইমরুলের জন্য। চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দৃশ্যে জিম্বাবুয়ের জন্য কী অপেক্ষা করছে, প্রথম দৃশ্যেই তার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন এই ম্যাচের রচয়িতা। ইমরুল-তামিম উদ্বোধনী জুটিতে তুললেন ২২৪ রান, ৬৩.৫ ওভারে। নিজেদেরই ১৮৫ রানের রেকর্ড ভেঙে দিলেন তারা। যে রেকর্ড দু’জনে মিলে গড়েছিলেন লর্ডসে, ২০১০-এ। বুধবার দুই বাংলাদেশী ওপেনারেরই বৃহস্পতি ছিল তুঙ্গে। দু’জনেই সেঞ্চুরি করেছেন। তামিমের ষষ্ঠ ও ইমরুলের দ্বিতীয় টেস্ট শতক। আর কী করলেন দু’জনে? এই প্রথম টেস্ট ম্যাচে প্রথম দুটি সেশনের পুরোটা সময় পার করে দিলেন দুই ওপেনার। বাংলাদেশ দুটি উইকেট হারিয়েছে প্রথম দিনের শেষ সেশনে। মুমিনুল হক ও মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত যথাক্রমে ৪৬ এবং ৫ রানে।
কাজের কাজটা করে গেছেন কিন্তু ইমরুল কায়েস এবং তামিম ইকবাল। নিজের দুর্দান্ত ফর্মের ধারাবাহিকতায় বাঁ-হাতি তামিম নিজের মাঠে মিড-অনে যখন হ্যামিলটন মাসাকাদজার অসাধারণ ক্যাচে উল্টোপথ ধরেন, তার নামের পাশে লেখা হয়ে গেছে ১০৯ রান। খুলনায়ও প্রথম ইনিংসে ঠিক একই স্কোর ছিল তার। চার বছর আগে লর্ডস ও ম্যানচেস্টারে পরপর দুটি শতক হাঁকানোর স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন তামিম খুলনা এবং চট্টগ্রামে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করে। ঘরের মাঠে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি।তামিম-ইমরুলের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে চা-বিরতির তিন ওভার পর। জুটিটা ভাঙেন জিম্বাবুয়ের খণ্ডকালীন স্পিনার সিকান্দার রাজা। আর ইমরুল দিনের খেলা শেষ হওয়ার ১১ ওভার আগে সাজঘরে ফেরেন ১৩০ রান করে। দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ রান যোগ করেন শামসুর রহমানের জায়গায় সুযোগ পাওয়া ইমরুল কায়েস। মুমিনুল ও মাহমুদউল্লাহ তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে তোলেন ৩১ রান।প্রথমদিন সবকিছু ঠিকঠাকমতো হল। টস জেতা থেকে শুরু করে উড়ন্ত সূচনা, দুটি শতরান, উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড। শুধু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরে উঠল না দর্শকে। তাই বলে ‘তামিম, তামিম’ স্লোগান থেকে বঞ্চিত হয়নি স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ঋদ্ধ করার প্রাথমিক কাজ সেরে ফেলেছেন দুই ওপেনার। এখন বাকিদের দায়িত্ব জিম্বাবুয়ের ঘাড়ে রানের বোঝা চাপিয়ে দেয়া। সিরিজ ৩-০ দিব্যি দেখতে পাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। (স্কোরকার্ড খেলার পাতায়)

No comments

Powered by Blogger.