এবার স্কুলেও অনলাইনে ভর্তির আবেদন

ঢাকা মহানগর স্কুলে ভর্তি ফরম বিক্রি হবে অনলাইনে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথমবারের মতো ঢাকা মহানগরীর ৩০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি অনলাইনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে স্কুলগুলোতে আবেদন ফরমের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে কয়েকটি নামিদামী বেসরকারি স্কুলও ইতিমধ্যেই অনলাইনে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সুপারিশের আলোকে প্রাথমিক অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার দেশের সরকারি স্কুলে ভর্তি নীতিমালা ২০১৫ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (মাধ্যমিক) মো. জাকির হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তররের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুনসহ উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, এবার নীতিমালায় বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন লাগবে। সরকারি ৩০টি স্কুলে ভর্তি হতে হলে এবার স্কুলের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ফরমের মূল্য পরিশোধ করতে হবে ‘বিকাশে’র মাধ্যমে। এবার ফরমের মূল্য ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। বেসরকারি স্কুলগুলোকেও এই নিয়ম-নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। সরকারি স্কুলে কবে থেকে ফরম বিতরণ শুরু হবে তা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) আগামী সপ্তাহে এক বৈঠকের মাধ্যমে ঠিক করার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মাউশি’র উপ-পরিচালক (মাধ্যমিক) একেএম মোস্তাফা কামাল বলেন, গতকাল ভর্তি সংক্রান্ত একটি বৈঠক ভর্তির বিষয়ে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। মাউশি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ২৪টি স্কুলকে এবারো এলাকাভিত্তিতে ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ এই তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হবে। এলাকা অনুযায়ী ঢাকার নতুন ছয়টি সরকারি স্কুলকে এবার বিভিন্ন গ্রুপে বণ্টন করা হবে। আগামী সপ্তাহে সেই বণ্টন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। নতুন স্কুলগুলো হচ্ছে আজিমপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, হাজারীবাগ শেখ রাসেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মিরপুরের দুয়ারীপাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডেমরার আলহাজ হাজী গফুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভাষানটেক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উত্তরখানের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। একই গুচ্ছের একাধিক স্কুল থেকে ভর্তি ফরম কেউ কিনতে পারবে না। একজন শিক্ষার্থী তিনটি গুচ্ছের প্রতিটি থেকে একটি করে সর্বোচ্চ তিনটি ফরম কিনতে পারবে। যে স্কুলে ভর্তি হতে আগ্রহী সেখান থেকেই ফরম কিনতে হবে। তিন ক্যাটিগরিতে ভাগ করা স্কুলগুলোতে একই দিনে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। ‘ক’ গ্রুপের স্কুলগুলো হচ্ছে গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, নিউ গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুল, ইসলামিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, মিরপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও নবাবপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়। ‘খ’ গ্রুপের স্কুলগুলো হচ্ছে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত হাইস্কুল, গভ. মুসলিম হাইস্কুল, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও ধানমন্ডি কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়। আর ‘গ’ গ্রুপে রয়েছে ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুল, টিকাটুলি কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, আরমানীটোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, গণভবন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও তেজগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।

এ ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীতে গত বছরের মতোই ৫০ নম্বরের এক ঘণ্টার ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ১০০ নম্বরের ২ ঘণ্টার পরীক্ষা নেয়া হবে। আর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীতে বাংলা ১৫, ইংরেজি ১৫ ও গণিতে ২০ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বরের এক ঘণ্টার এবং অন্যান্য শ্রেণীতে বাংলা ৩০, ইংরেজি ৩০ ও গণিতে ৪০ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের ২ ঘণ্টার পরীক্ষা নেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.