আইসিবি ব্যাংকের নথি চেয়েছে দুদক

কথিত ব্যবসায়ী ওয়াহিদুর রহমানের হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অনুসন্ধানে এবার রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক ওরিয়েন্টাল ব্যাংক) কাছ থেকে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক জুলফিকার আলীর স্বাক্ষরে বুধবার ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর রেকর্ডপত্র চেয়ে চিঠি লেখা হয়।
সূত্র জানায়, আইসিবি ব্যাংকের কাছ থেকে ওয়াহিদুর রহমানের ঋণ গ্রহণ সংক্রান্ত সমুদয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, ঋণ চেয়ে করা আবেদনপত্র, প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন রেকর্ড, বন্ধকী সম্পত্তির দলিল, ঋণ মঞ্জুর সংক্রান্ত বোর্ডের সিদ্ধান্ত, ব্যাংকটিতে তার হিসাব নম্বর এবং লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য, জালিয়াতি তদন্তে ব্যাংকটিতে অভ্যন্তরীণ কোনো তদন্ত কমিটি হয়ে থাকলে কমিটির প্রতিবেদন।এর আগে সিটি ব্যাংক, কৃষি ব্যাংকের রেকর্ডপত্র হাতে পায় দুদক। ওয়াহিদুর রহমানের হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনও হাতে পায়। তবে আইসিবি ব্যাংকের রেকর্ডপত্র হস্তগত হওয়ার পরপরই তলব করা হবে ওই ঋণ কেলেংকারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।সূত্রমতে, চারটি বেসরকারি ও একটি বিশেষায়িত ব্যাংক থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন ওয়াহিদুর রহমান নামক এক ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে চলতিবছর ১৫ জুলাই যুগান্তরে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এ টাকা পাচার করেন ওয়াহিদুর রহমান। ঋণের অর্থে সম্পদের পাহাড় গড়েন বিদেশে। ঘটনাটি পুরনো হলেও এ বিষয়ে মামলা হয়েছে একাধিক। অথচ ঋণের বিপরীতে তিনি ব্যাংকে যে সম্পত্তি বন্ধক রেখেছেন তা অক্ষত রয়েছে। ব্যাংকগুলো ঋণের নামে হাতিয়ে নেয়া অর্থ উদ্ধারে সচেষ্ট হয়নি।প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৪টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আÍসাৎ করেন ওয়াহিদুর। এর মধ্যে বেসিক ব্যাংক থেকে ৭৬৭ কোটি, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১০০ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১২৪ কোটি, সিটি ব্যাংক থেকে ৬ কোটি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এর বেশিরভাগ টাকাই তিনি ঋণ নিয়েছেন ভুয়া ও বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে। ব্যাংকে ঋণের আবেদনপত্রে উল্লেখিত নাম-ঠিকানার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। যুগান্তরের এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এ লক্ষ্যে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তিন সদস্যের টিম গঠন করে। এ টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপপরিচালক মো. জুলফিকার আলী।

No comments

Powered by Blogger.