এখনও অভিনয় করতে চান ফরিদ আলী

অভিনেতা ফরিদ আলীকে চেনেন না এমন নাটক বা সিনেমাপ্রিয় দর্শক এ দেশে খুঁজে পাওয়া বোধকরি দুষ্কর। সবার কাছে একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র কৌতুক অভিনেতা হিসেবে পরিচিত থাকলেও তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন সাংবাদিকও বটে। ৭৩ বছর বয়সী ফরিদ আলী এখনও অভিনয় করতে চান। পুরান ঢাকার ঠাটারি বাজারের বাসিন্দা ফরিদ আলী শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হলেও ক্যামেরার সামনে এখনও প্রাণবন্ত। যে কারণে গত ঈদে তিনি আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘পূর্ণিমার চাঁদে মেঘ’ নাটকে অভিনয় করেছেন। তবে কবে সর্বশেষ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তা এখন মনে করতে পারছেন না এ অভিনেতা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ফরিদ আলীকে বঙ্গবন্ধু ‘চাল্লি ফরু’ বলে ডাকতেন। এ নামে কেউ ডাকলে তখন খুব ভাল লাগে তার। ১৯৫৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা থাকলেও তা আর শেষ পর্যন্ত দেয়া হয়নি এ মানুষটির। বিটিভির প্রথম হাসির নাটক ‘ত্রি রত্ন’র তিনজন ছিলেন প্রয়াত আশীষ কুমার লৌহ, জলিল ও ফরিদ আলী। মূলত সালাহউদ্দিনের পরিচালনায় ‘ধারাপাত’ চলচ্চিত্রে ব্যঙ্গ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে ফরিদ আলীর সম্পৃক্ততা ঘটে। এরপর সংগম, অভিশাপ, পরশমণি, গুণ্ডা, রংবাজ, সপ্তডিঙ্গা, যে আগুনে পুড়ি, তিতাস একটি নদীর নাম, জালিয়াত, পালঙ্ক, অধিকার, গোপাল ভাঁড়, তরুলতা, ঘুড্ডি, লাগাম, কলমীলতা, ভাগ্যলিপি, সাধনাসহ বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ফরিদ আলী বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে আমজাদ হোসেনের মতো গুণী, মেধাবী নির্মাতা আর আসবেন না। নায়ক রাজ রাজ্জাক-কবরী আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের অহঙ্কার। এমন সফল জুটিও আর হবে না আমাদের চলচ্চিত্রে। আমার সৌভাগ্য যে, আমি আমজাদ হোসেনের মতো গুণী পরিচালক এবং নায়করাজ রাজ্জাক ও কবরীর সঙ্গে অভিনয় করতে পেরেছি। ফরিদ আলী তার অভিনয় জীবনে চলচ্চিত্রে বেশি অভিনয় করেছেন রাজ্জাক ও কবরীর সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে ফরিদ আলী সবার ছোট। বিটিভির চতুর্থ নাটক ‘নবজন্ম’ ছিল ফরিদ আলীরই লেখা। তবে তার লেখা সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় আলোচিত নাটক ছিল ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’। ফরিদ আলী ১৯৭৫ সালের ২০শে আগস্ট মনোয়োরা বেগম বিউটির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি চার পুত্র ও এক কন্যার গর্বিত পিতা। ফরিদ আলী কৃতজ্ঞ ফরিদুর রেজা সাগরের কাছে। কারণ, দীর্ঘ এক যুগ এ মানুষটি প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন তাকে।

No comments

Powered by Blogger.