আমি স্বপ্নের জাল বুনি by পার্থ প্রতিম মজুমদার
ষাট যখন দরজায় ধাক্কা দেওয়ার জন্য উন্মুখ
তখন ‘অ্যাকশন’ বলার সঙ্গে সঙ্গে যেমন একজন অভিনেতা সুন্দর করে অ্যাঙ্গেল
দিয়ে তাকায়, আমি আজকাল রাস্তায় যেতে যেতে নিজেই নিজেকে ‘অ্যাকশন’ বলি আর
ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাই, গুনগুন করি ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে...’।
সোনার চামচ মুখে নিয়ে আমার জন্ম হয়নি। ৪ মাঘের হাড়কাঁপানো শীত আর প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে মধ্যদুপুরে পাবনার বাড়ির উঠানে (আঁতুড়ঘর) আমার জন্ম। সংখ্যালঘু হিন্দুরা দেশ বিভাগের কারণে দেশত্যাগে ব্যস্ত হলেও আমার বাবাকে তাঁর চার পুত্র ও এক কন্যাসন্তান নিয়ে দেশত্যাগের কথা বলতে বা আলোচনা করতে শুনিনি।
বাবাকে তাঁর পেশাগত কারণে পাবনা জেলার বিভিন্ন শহর-গ্রামে যেতে হতো। মাঝেমধ্যে নাছোড়বান্দা আমি সঙ্গ নিতাম। আবিষ্কার করলাম, বিশাল এক ভুবন। বাড়ির বাইরেও অন্য এক পৃথিবী। স্বচক্ষে অবলোকন করলাম বিভিন্ন ধর্মের সামাজিক লোকাচার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আরও কত কী! পড়ালেখার চেয়েও তখন আমার অনেক বেশি আনন্দ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায়। খুব রোগা ছিলাম বলে ডাকনাম রাখা হয়েছি ‘ফড়িং’। সুতরাং একটা ফড়িং এ-পাড়া ও-পাড়া করে বেড়ালে কেউ কি তার খবর রাখতে পারে। দাদুবাড়ি কালাচাঁদ বাড়িতে নাটমন্দির ছিল, যেখানে বছরে দুবার রাতব্যাপী ১০ দিন ধরে যাত্রা, নাটক, নাচ, গান আরও কত কিছু যে হতো, তা বলে শেষ করা যাবে না। চৈত্র মাসে পাবনার চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে ‘হাজরা বা গাজন’ নামে মাসজুড়ে একটা উৎসব হয়, যা দেশের অন্য কোনো শহরে হয় না। সে এক বিশাল আয়োজন। তাতে আমার উপস্থিতি কারও চোখেও পড়ত না। মহরমের তাজিয়া-লাঠিখেলায়, কবরস্থান-শ্মশান কোথায় নেই আমি। আমি তো ফড়িং কারও ‘সু’ বা ‘কু’ কোনো দৃষ্টিতেই আমি পড়ি না। আবিষ্কার করলাম প্রতিটি উৎসবের একটা ঐতিহ্য রূপ-গন্ধ-ছন্দ আছে। খুঁজে পেলাম তার ভেতর থেকে দেহভঙ্গি, অভিব্যক্তি আর নৈঃশব্দের সংগীত। আকৃষ্ট হলাম কিন্তু জানতাম না এগুলোকে কী বলে? কথা না বলেও আমরা অনেক কথা বলি, ভাষা ব্যবহার না করেও আমরা দেহ দিয়ে এমন অঙ্গভঙ্গি করি, যা ভাষা উচ্চারণের চেয়েও অনেক বেশি প্রকট ও শক্তিশালী। যাকে নাম দেওয়া হয়েছে ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ বা ‘দৈহিক ভাষা’। আরও পরে জেনে ছিলাম এগুলোকে সম্মিলিত করেই একটা শিল্পের জন্ম হয়েছে যার নাম ‘মূকাভিনয়’ বা ইংরেজিতে ‘মাহিম’ আর ফরাসিতে ‘মিম’।
প্রতিটি মানুষের রয়েছে আলাদা ব্যক্তিত্ব, ভিন্ন অভিব্যক্তি, রহস্যেঘেরা তার অঙ্গভঙ্গি। জীবনের এত পেশা-নেশা থাকতে এই রহস্যেঘেরা শিল্পকেই আলিঙ্গন করে জীবনের ৪০টি বছর কাটিয়ে দিলাম।
মূকাভিনয়ের শৈল্পিক রূপ চাক্ষুষ করার সুযোগ হয় ষাটের দশকের শেষ দিকে কলকাতায় যোগেশ দত্তের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর। পারিবারিক পরিচয়ের গণ্ডিতে তাঁর কাছেই আমার প্রথম হাতেখড়ি।
সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশে ঢাকায় যখন আমি স্থিত তখন আমি ‘ঢাকা সংগীত মহাবিদ্যালয়ের’ ছাত্র। হাঁটি হাঁটি পা পা করে মূকাভিনয়ের অনুশীলন একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসে গঠন হওয়া সংগঠন ‘গণসাংস্কৃতিক পরিষদ’ নামের ড্যান্স ড্রামা দলে প্রখ্যাত নাচের শিল্পী ও শিক্ষক আমানুল হকের কাছে নৃত্যে প্রশিক্ষণ লাভ করি। দেশব্যাপী এই দলের প্রতিটি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করি। মঞ্চ ও টেলিভিশনে একক মূকাভিনয় প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ দর্শকদের অভূতপূর্ব সাড়া পাই এবং সেই ভালোবাসাই আমাকে আজকের এই স্থানে পৌঁছে দিয়েছে।
ফরাসি রাষ্ট্রদূত লুইমরোর চোখে পড়ে যাওয়াতে ও ফরাসি দূতাবাসের আন্তরিক চেষ্টায় এশিয়ার প্রথম মাইমের স্কলারশিপ জুটে যায় ফরাসি দেশের। সেই আট মাসের জন্য আসা অচিন দেশে আমি কাটিয়ে দিলাম তিনটি দশক। লালকার্পেট ও ফুলের মালা দিয়ে আমাকে কেউ বরণ করেনি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিল্পীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আর অমানুষিক পরিশ্রম করে আমাকে টিকে থাকতে হয়েছে। আজও তার শেষ হয়নি। আমি মাঝেমধ্যে আমাকে প্রশ্ন করি আমি কি সত্যি অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি? অনেক বড় শিল্পী? না আমি দুটোর একটাও না। যে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে আজ আমি মাইম শিল্পকে যেখানে পৌঁছাতে পেরেছি, নিজের স্বীকৃতি আদায় করে নিতে পেরেছি তা শুধু সম্ভব হয়েছে আমার লক্ষ্যে স্থির থাকা আর দাঁতে দাঁত চেপে লেগে থাকার সুবাদে। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ক্লাস করার পর মৃতপ্রায় অবস্থায় যখন হোস্টেলে ফিরতাম ঘরের কার্পেটের মাঝে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়তাম আর অনুভব করার চেষ্টা করতাম ‘মহিলা সমিতি’ মঞ্চে বা ‘টিএসসি’ মঞ্চে অথবা ‘শিল্পকলার’ মঞ্চে আমার শো শেষে হলভর্তি দর্শকদের আন্তরিক উচ্ছ্বাস ও হাততালি। আমার অক্সিজেন নেওয়া শেষ, তৈরি হতাম আবার পরের দিনের জন্য। প্যারিসের প্রথম চার বছর বলতে গেলে সূর্যের মুখই আমি দেখিনি। একটি থিয়েটার নাম তার ‘থিয়েটারের নবজন্ম’ এর মাটির নিচে ছিল ‘মারসেল মার্সো’র আন্তর্জাতিক মাইম স্কুল ‘ইকোল ইন্টারন্যাশনাল মাইমোড্রামা মারসেল মার্সো, প্যারিস’ সেই স্কুলে সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে ঢুকে যেতাম, বেরোতাম রাত ১০টায় বা কখনো রাত ১২টায়। আমি প্রতিভাধর হয়তো ছিলাম না কিন্তু অল্প প্রতিভাকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘষেছি। শনি-রবি যেখানে সবার ছুটি সেই উইকেন্ডেও বিশেষ ব্যবস্থায় চাবি নিয়ে অনুশীলন করতাম। কলকাতায় যোগেশ দত্তর কাছে অনুশীলন করার সময় পকেটে তেমন পয়সা ছিল না বলে কলকাতার ফুটপাতের ঝুপড়ি দোকানে এটা স্লাইস পাউরুটি আর এক প্লেট ঘুঘনি বা আলুর দম দিয়ে দুপুরের খাওয়া শেষ করেছি। তেমন প্যারিসেও ক্লাসের শেষে প্রায় বন্ধ হয় সান্ডউইচের দোকান থেকে সারা দিন ধরে পড়ে থাকা অবিক্রীত সান্ডউইচ অতিকষ্টে চিবোতে চিবোতে মেট্রো বন্ধ হয়ে যাওয়াতে চার-পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে হোস্টেলে ফিরেছি।
মারসেল মার্সো ছাড়াও স্কুলটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন পৃথিবীর বিখ্যাত সব শিক্ষক, যাঁদের কাছ থেকে আমরা আপ্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করেছি। মাইম, প্যান্টোমাইম, করপোরাল মাইম, মাইমোড্রাম ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে দুবারে চার ঘণ্টা করে শিখতে হয়েছে থিয়েটার একরোবেটিকস, ব্যালে, মডার্ন ড্যান্স, থিয়েট্রিক্যাল একরোবেটিকস, লাঠি, সোর্ড খেলা ইত্যাদি। যতভাবে দেহকে নরম করা যায় এবং একই সঙ্গে শক্তি অর্জন করা যায় তার সব শিক্ষাই আমাদের দেওয়া হয়েছে। মাঝেমধ্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকেও শিক্ষক-শিক্ষিকা এসেছেন আমাদের অন্য ধরনের কিছু শেখাতে। পৃথিবীর বিখ্যাত শো যখন প্যারিসে চলছে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে তা বিনা মূল্যে দেখার জন্য, কারণ আমরা প্রবাদপ্রতিম মার্সোর ছাত্র। কথার ছলে আমাকে মার্সো একবার বলেছিলেন যে ষাটের দশকের প্রথম দিকে তিনি যখন ভারতবর্ষে শো করতে গিয়েছিলেন পণ্ডিত নেহরু তখন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। নেহরু দ্বিধা করছিলেন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কি না। অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে উঠে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী জড়িয়ে ধরে নিজের পরিহিত কোটে লাগানো গোলাপ ফুল খুলে মারসেল মার্সোকে উপহার দিয়ে পরদিন বাড়িতে ডিনারে ডেকেছিলেন।
এই মানুষটি আমাকে তাঁর ছাত্র থেকে দলের সদস্য ও একই সঙ্গে ‘পুত্রসম’ অভিহিত করেছেন। মনে পড়ে আমার প্রথম আমেরিকা ভ্রমণ মারসেল মার্সোর সঙ্গে ১৯৮৪ সালে। আমাদের দলের থাকার জায়গা হয়েছিল শিকাগো ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পাসে। প্রতি রাতে শো শেষে হোস্টেলে ফিরে তার লবিতে চলত মার্সোকে ঘিরে আমাদের রাতব্যাপী আড্ডা। তিনি তাঁর সারা জীবনের ঘটে যাওয়া সুখ-দুঃখের গল্প যেমন বলতেন তেমন অঙ্গভঙ্গি করে তাঁর ভাবগুরু চার্লি চ্যাপলিনের স্ত্রী কীভাবে প্যারিসের ‘অরলি’ বিমানবন্দরে চ্যাপলিনের মুখোমুখি হয়ে যখন কথা শুরু করেছেন ‘ও তুমিই সেই সাদামুখের বিখ্যাত ব্যক্তি।’ চার্লি চ্যাপলিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছেন, উত্তর দেওয়ার আগেই চার্লি চ্যাপলিনকে কীভাবে হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন তা আমাদের দেখাতেন। আমরা হেসে গড়িয়ে পড়তাম। আসলে মার্সো ছিলেন আমার মেনটর বা নির্দেশক এবং একই সঙ্গে গুরু ও পিতা। এই বিশাল শিল্পীর কাছে তাঁর অন্তরের কাছে যে আমি কীভাবে পৌঁছে ছিলাম তা ভাবতেও আজ অবাক লাগে। নব্বইয়ের দশকে ইনস্টিটিউট দ্য ফ্রঁস একাডেমি ফ্রঁসেজ তাঁকে যখন একাডেমিয়ানের স্বীকৃতি দেয় একাডেমি কুপলের ওই বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁর ছাত্রদের মধ্যে থেকে তিনি শুধু আমাকে তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য নির্বাচন করেছিলেন। এ এক বিশাল সম্মান।
মারসেল মার্সো বেঁচে থাকা অবস্থায় আমি ভাবতেও পারিনি দেশে স্থায়ীভাবে ফিরে যাওয়ার কথা। আর তিনিও সেটা চাননি। ২০০৮ সালে ‘ঢাকার লাভ ফাউন্ডেশন’ আমাকে আমন্ত্রণ জানায় তাদের কনভেনশনে শো করার জন্য। ঢাকার বিশাল মঞ্চে তাদের আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের সম্মানে আমার একক ও আমার নির্দেশিত মাইমোড্রামা ‘জীবনের জন্য শ্বাস’ পরিবেশিত হয়। হলভর্তি সারা দেশের বিখ্যাত চিকিৎসক ও তাঁদের পরিবার এবং বিদেশি অতিথিদের মুহুর্মুহু করতালিতে ও উচ্ছ্বাসে আমি সিক্ত হই। তখন অনেকেই আমাকে অনুরোধ করেন কেন আমি দেশে আন্তর্জাতিকমানের একটা মাইম ইনস্টিটিউট তৈরি করছি না! যা হতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একমাত্র ইনস্টিটিউট। এখানে উল্লেখ্য যে আমি প্রথম এশিয়ান যে মারসেল মার্সোর কাছে প্রথম কাজ করার বা ছাত্র হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এর আগেও যতবার দেশে গেছি অনেক মানুষই আমাকে একই কথা বলেছেন। আমিও ভাবলাম, কেন নয়? মার্সো আর এই পৃথিবীতে নেই তাঁর কাছ থেকে ও তাঁর স্কুল থেকে সারা জীবন পরিশ্রম করে যা শিখেছি তা যদি নিজ দেশের কিছু ছেলেমেয়ের মধ্যে রেখে যেতে পারি এই অতি প্রাচীন ও একই সঙ্গে আধুনিক এই শিল্প বেঁচে থাকবে চিরদিন। যার দ্বারা উপকৃত হবে আমাদের নতুন ও বর্তমান প্রজম্ম। তারা উপকৃত হবে প্রথম তাদের দৈহিক গঠনে, সাংস্কৃতির প্রতিটি কর্মকাণ্ডে বিশেষ করে যারা নাটক, যাত্রা, নাচগান, চলচ্চিত্রে অভিনয়, মডেলিংয়ের সঙ্গে জড়িত। মাইম বা মূকাভিনয়কে বলা হয় সব পারফরমিং শিল্পের আদিরূপ বা ভিত্তি। আর একটা চিন্তাও মাথায় ছিল আমার। তো বয়স হচ্ছে এই শিল্পের জন্য দরকার শারীরিক ফিটনেসের, যা ভবিষ্যতে আমার পক্ষে হয়তো ধরে রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। গত সাড়ে চার বছরের অক্লান্ত চেষ্টায় আমি একটা ইটও গাঁথতে পারিনি। আমি দেশে গিয়ে নিজ খরচায় দিনের পর দিন থেকেছি। আমার পরিচিত সরকারি ও বেসরকারি সব জায়গাতেই আমার পরিকল্পনার কথা মৌখিক বলেছি ও লিখিত দিয়েছি। সবাই আমাকে শতভাগ আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু শক্ত দেয়ালকে আমি ঠেলে সরিয়ে আশার কোনো আলো দেখতে পাইনি।
রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘একুশে পদক’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নিতে আমি যেতে পারিনি ফ্রান্সের অন্য শহরে একই সন্ধ্যায় আমার শো থাকার কারণে। কিন্তু আমি আমার পেশাগত সব কাজ বাদ দিয়ে এই সাড়ে চার বছরে নিজ দেশে বারবার গেছি। ঢাকায় বসে না থেকে সারা দেশের বিভিন্ন গ্রুপ থিয়েটার অলিয়ঁস ফ্রঁসেজের আমন্ত্রণে বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, পাবনা, রংপুর, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, যশোর মাইমের ওয়ার্কশপ করতে ছুটে বেড়িয়েছি বিনা পারিশ্রমিকে। সারা দেশে যে সাড়া আমি পেয়েছি এই শিল্পটি সঠিকভাবে শেখার জন্য তাতে আমি অভিভূত। আমার দ্বারা সামান্য যেটুকু হতে পারত একটি আন্তর্জাতিক মানের ‘মাইম’ ইনস্টিটিউট। যেখানে ছাত্রছাত্রীরা শুধু মাইমই শিখবে না, তারা একই সঙ্গে শিখবে দেহকে ভালো রাখার সব ধরনের কলাকৌশল। আসল কথা শরীরটাকে ভালোবাসতে শিখতে হবে। যেদিন শরীরটা ভালো থাকে না সারা পৃথিবীর সব আনন্দ সেদিন বিষাদ লাগে। এই কথাটি আমি হয়তো যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁদের বোঝাতে পারিনি সঠিকভাবে। আমারই অক্ষমতা। তবুও আমি প্রতিদিন নতুন সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বপ্ন দেখি। ‘স্বপ্নের পর স্বপ্ন’ নিয়ে জাল বুনি।
পার্থ প্রতিম মজুমদার: মূকাভিনয়শিল্পী
No comments