অবরোধে লন্ডভন্ড ট্রেনের শিডিউল
তিন দিনের অবরোধে ল-ভ- হয়ে গেছে ট্রেনের সিডিউল। প্রতিটি ট্রেন চলছে দেরিতে। এর মধ্যে কোনটা ১৩/১৪ ঘন্টা দেরিতে গন্তব্যে এসে পৌঁছাচ্ছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহের রেল যোগাযোগ চালু হয়েছে ৩৭ ঘন্টা পর। গতকালও ঢাকার সাথে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নাটোর ও বগুড়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। অবরোধের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তির সীমা ছাড়িয়ে গেছে। একই সাথে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন রেল কর্মী ও যাত্রীরা। আতঙ্কের মধ্যে কাটছে রেল কর্মীদের দিন। চলার পথে কখন কোথায় দুর্ঘটনা ঘটে সে আশংকায় তাদের পরিবার পরিজনদেরও ঘুম হারাম হয়ে গেছে। নাশকতারোধে রেল কর্তৃপক্ষ যে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলছে তা মানতে নারাজ রেল কর্মীরা। তাদের মতে, পর্যাপ্ত ট্রালভ্যান না থাকায় সামান্যতম নিরাপত্তাও দিতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ কিছু স্থানে পাইলট (জরুরী ইঞ্জিন) রাখা হলেও তা কার্যক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অবরোধের তৃতীয় দিনে নওগাঁর আত্রাইয়ের থাওয়াই পাড়া এলাকায় ও ২৪৮ নম্বর ব্রিজের কাছে বুধবার রাতে ৩২ ইঞ্চি রেলপাত কেটে ফেলায় হয়। এতে সৈয়দপুরের সঙ্গে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনার সঙ্গে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সকল প্রকার রেল যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয় রেল প্রকৌশলী বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন জানান, অবরোধকারীরা রাতের অন্ধকারে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার থাওয়াই পাড়া এলাকায় ৩২ ইঞ্চি রেলপাত কেটে ফেলে। রেলকর্মী মাহমুদু হাসান ভোর রাতে রেললাইন কাটা দেখতে পেয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে সংবাদ দেয়। খবর পেয়ে রেলকর্তৃপক্ষ সান্তাহার থেকে প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জামাদি নিয়ে গিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে রেললাইনের কাটা অংশ মেরামত করে। এর ফলে রেল যোগাযোগ পুনরায় স্বাভাবিক হয়। এই রেললাইন কাটার ফলে সৈয়দপুরের সঙ্গে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনার রেল যোগাযোগ প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বিছিন্ন ছিল। অন্যদিকে, কুমিল্লার অশোকতলা রেল ক্রসিংয়ের ২০০ গজ দক্ষিণে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত সোয়া একটায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কুমিল্লার স্টেশনমাস্টার সফিকুর রহমান জানান, ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুটি বগির কয়েকজন যাত্রী সামান্য আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া আটটার দিকে বিকল ইঞ্জিনটি উদ্ধার করে মেরামত করা হয়েছে। অপরদিকে, বগুড়ায় অবরোধকারীরা রেললাইন উপড়ে ফেলায় ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে বগুড়ার সাবগ্রামের ছাতিয়ান তলায় ৭২ ফুট রেলের লাইন উপড়ে ফেলেছে অবরোধকারীরা। এতে বগুড়ার সব রুটের রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকটি স্টেশনে আটকা পড়েছে চারটি ট্রেন। এরফলে আটকা পড়েছেন কয়েক হাজার ট্রেনযাত্রী। রেলওয়ে সূত্রে জানায়, ভার রাতে অবরোধকারীরা বগুড়ার সাবগ্রামের ছাতিয়ান তলায় ৭২ ফুট রেললাইন উপড়ে ফেলায় বগুড়ার সঙ্গে লালমনিরহাট ও সান্তাহারের ট্রেন চলালচ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে লালমনিরহাট এক্সপ্রেস, করতোয়া এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ও কলেজ ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে।
গত তিন দিনে রেলপথ অবরোধের কারণে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে ট্রেনের সিডিউল। কমলাপুর স্টেশন সূত্র জানায়, গতকাল প্রতিটি ট্রেনই দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সুবর্ণ এক্সপ্রেস ৪ ঘন্টা, ওয়ান আপ মেইল ১৩ ঘন্টা, রংপুর এক্সপ্রেস ১১ ঘন্টা, একতা ৫ ঘন্টা দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোও ৪ থেকে ১০ ঘন্টা দেরিতে চলাচল করছে। এতে করে ট্রেনের যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ট্রেন চালক (এলএম) জানান, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করছেন। পরিবার পরিজনও শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষ যেভাবে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলছে বাস্তবে তার কিছুই হচ্ছে না। রেল পুলিশের কোন ট্রলিভ্যান না থাকায় সব ট্রেনই চলছে সীমাহীন ঝুঁকি নিয়ে। ট্রলি থাকলে ট্রেনের আগে তা চালিয়ে নিয়ে রেল লাইন ঠিক আছে কি না তা জানা যেতো বলে একজন চালক জানান। তার মতে, প্রতিটি ট্রেনের আগে একটা ট্রলি বা ছোট আকারের কোন যান রেলের উপর দিয়ে চালিয়ে নিয়ে গেলে অন্তত দুর্ঘটনা থেকে রেহাই মিলতো। ওই চালক বলেন, রেল কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বলতে আমাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, “দেখে শুনে সতর্কতার সাথে যান”। আমরা যেভাবে চলি তাতে দেখে শুনে যাওয়ার কোন উপায় নেই। এমতাবস্থায় আমরাও নিরাপত্তাহীন, যাত্রীরাও বটে।
গত তিন দিনে রেলপথ অবরোধের কারণে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে ট্রেনের সিডিউল। কমলাপুর স্টেশন সূত্র জানায়, গতকাল প্রতিটি ট্রেনই দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সুবর্ণ এক্সপ্রেস ৪ ঘন্টা, ওয়ান আপ মেইল ১৩ ঘন্টা, রংপুর এক্সপ্রেস ১১ ঘন্টা, একতা ৫ ঘন্টা দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোও ৪ থেকে ১০ ঘন্টা দেরিতে চলাচল করছে। এতে করে ট্রেনের যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ট্রেন চালক (এলএম) জানান, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করছেন। পরিবার পরিজনও শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষ যেভাবে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলছে বাস্তবে তার কিছুই হচ্ছে না। রেল পুলিশের কোন ট্রলিভ্যান না থাকায় সব ট্রেনই চলছে সীমাহীন ঝুঁকি নিয়ে। ট্রলি থাকলে ট্রেনের আগে তা চালিয়ে নিয়ে রেল লাইন ঠিক আছে কি না তা জানা যেতো বলে একজন চালক জানান। তার মতে, প্রতিটি ট্রেনের আগে একটা ট্রলি বা ছোট আকারের কোন যান রেলের উপর দিয়ে চালিয়ে নিয়ে গেলে অন্তত দুর্ঘটনা থেকে রেহাই মিলতো। ওই চালক বলেন, রেল কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বলতে আমাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, “দেখে শুনে সতর্কতার সাথে যান”। আমরা যেভাবে চলি তাতে দেখে শুনে যাওয়ার কোন উপায় নেই। এমতাবস্থায় আমরাও নিরাপত্তাহীন, যাত্রীরাও বটে।
No comments