অনলাইন থেকে-আড়ি পাতা নিয়ে তোলপাড়

যুক্তরাষ্ট্র টেলিফোনে আড়ি পাতার মতো গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত, এমন অভিযোগ সম্পর্কে স্পষ্ট মন্তব্য জানতে চায় লাতিন আমেরিকার সরকারগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সামরিক মিত্র এবং লাতিন আমেরিকার কলম্বিয়াও শেষ পর্যন্ত সুর মিলিয়েছে অন্যদের সঙ্গে।
তারাও জানতে চায়, বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট ও টেলিফোনে আড়ি পাতার যে অভিযোগ আছে, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কী বলছে?
যদি প্রমাণিত হয় যে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিবেশী এবং ব্যবসায়িক বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর ইন্টারনেট ও টেলিফোনে আড়ি পাতার মতো কাজ করছে, সেটা হবে অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য। এই মন্তব্য করেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিখ প্যানা নিটো।
এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা তথ্যকে উদ্ধৃত করে ব্রাজিলের পত্রিকায়ও প্রকাশ করা হয় যে লাতিন আমেরিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু দেশে যুক্তরাষ্ট্র ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি ইন্টারনেট ও টেলিফোনে আড়ি পাতার মতো কাজ করছে। দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে ব্রাজিল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী দেশ। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডিলমা রাউসেলফ পরিকল্পনা করছেন, আগামী অক্টোবরে সফরে গেলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্টত জানতে চাইবেন। আর ওই সময়ই যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা তাঁদের।
ব্রাজিলের একজন সিনেটর মন্তব্য করেছেন, তাঁদের স্বার্থেই স্নোডেনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে তাঁদের আহ্বান জানানো উচিত। এও ঠিক, সিনেটরদের যত সমালোচনাই হোক না কেন, প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিলের কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই। আড়ি পাতা বিষয়ক তথ্য ফাঁস হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ করতে চাইবে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের বিষয়ে তাদের যথারীতি আগ্রহ রয়েছে। লাতিন আমেরিকান দেশগুলো চায়, যুক্তরাষ্ট্র এই কাজের জন্য দুঃখ প্রকাশ করুক। কলম্বিয়া চায়, টেলিফোন ও ইন্টারনেটে আড়ি পাতা বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যগুলোও যাতে শুধু তাদের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে লেনদেন হয় সেটাও বলেছে।
এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোও তাদের পত্রপত্রিকায় কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের। চিলিও গুপ্তচরবৃত্তির এই ঘটনার সমালোচনা করেছে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষাকারী দেশ হিসেবে চিলিও বিশেষ অবস্থানে আছে। ভেনিজুয়েলা ও মেক্সিকোর তেল উৎপাদন বিষয়ক অতি গোপনীয় অনেক তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট প্যানা নিটোর মন্তব্য হচ্ছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকবে। তবে তিনি সন্তোষজনক জবাব আশা করছেন ওয়াশিংটনের কাছ থেকে। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও তদন্ত করছে। আর সে ক্ষেত্রে সত্যতা মিলে গেলে এটা হবে সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা।

লেখকদ্বয় : অ্যান্টনি বোদলে ও হেলেন মারফী
রয়টার থেকে ভাষান্তর মোস্তফা হোসেইন

No comments

Powered by Blogger.