ঢাকার আবাসিক গ্রাহকরা চরম গ্যাস সংকটে-রমজানজুড়ে দুর্ভোগের শঙ্কা

কুমিল্লার বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রের কূপে সংস্কারকাজ (ওয়ার্কওভার) এবং বিদ্যুৎকেন্দে গ্যাস সরবরাহের কারণে রমজানের প্রথম দিনেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সংকট শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিদ্যুৎকেন্দে গ্যাস সরবরাহ বর্তমান হারে চললে এ মাসের শেষের দিকে সংকট কাটতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঙ্গুরায় কূপে সংস্কারকাজের কারণে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম উত্তোলন হচ্ছে। সংস্কারকাজ শেষ হলে দৈনিক ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে আশা করছে পেট্রোবাংলা। এর পাশাপাশি রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে গিয়ে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ গুলো সচল করেছে সরকার। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দে প্রতিদিন এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেওয়া শুরু করেছে পেট্রোবাংলা। এর ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে।
গতকাল রাত ৮টায় এক ঘণ্টায় এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ছয় হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট। এর আগে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ৪ জুলাই রাত ৯টায় ছয় হাজার ৫৭৬ মেগাওয়াট। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ রেখে সরকার রমজানে লোডশেডিং ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দে গ্যাস দেওয়ার কারণে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকট চরমে পৌঁছেছে। বর্তমানে প্রতিদিন গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে ২৩০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি ঘনফুট।
বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকটের ব্যাপারে তিতাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কালের কণ্ঠকে বলেন, বাঙ্গুরায় ওয়ার্কওভারের কারণে গ্যাস উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে। বিদ্যুৎকেন্দে গ্যাস দেওয়ার কারণে তিতাস অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ আগের চেয়ে কম। এ কারণে আবাসিক গ্রাহকদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কবে নাগাদ গ্যাস সংকট কাটবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাঙ্গুরা আবার উৎপাদনে গেলে এ সংকট কমে যাবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে একবার বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রের কূপ ওয়ার্কওভার করা হয়েছিল।
এদিকে পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৯ জুলাইয়ের আগে বাঙ্গুরার সংস্কারকাজ শেষ হবে না। রমজানের সময় আবাসিক গ্রাহকদের দুর্ভোগে ফেলে এভাবে কূপ সংস্কারে কারণ সম্পর্কে কোনো বক্তব্য পেট্রোবাংলার কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। আবাসিক গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে পড়তে পারেন, সেই বিষয়েও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পেট্রোবাংলা বা তিতাস কর্তৃপক্ষ দেয়নি। ফলে রমজানের প্রথম দিনেই রাজধানীর হাতিরপুল, ভূতেরগলি, ঝিগাতলা, রায়েরবাজার, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী ও মিরপুরের একটি অংশের মানুষ ভয়াবহ সমস্যার মধ্যে পড়ে।
বিদ্যুৎকেন্দে গ্যাস দেওয়ার জন্য পেট্রোবাংলাকে চাপ : সরকারি তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে পিডিবি-পেট্রোবাংলা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে গতকাল সচিবালয়ে বৈঠকে বসলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পেট্রোবাংলাকে বসার জন্য।
সরকারি এই তিনি বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট (ডুয়েল ফুয়েল) পাওয়ার প্লান্ট, শাহজীবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট ও ঘোড়াশাল ৩৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট।

No comments

Powered by Blogger.