হরতালে সারা দেশে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধের মধ্য দিয়ে চলছে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। সকাল থেকে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ভোর থেকেই রাজধানীর কাওরানবাজার, ফার্মগেট, তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও শ্যাওড়াপাড়া, খিলগাঁও, শনিরআখড়া এলাকায় জামায়াত কর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে। এসময় বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টিরও চেষ্টা করে তারা। পুলিশ পিকেটিংয়ে বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় পুলিশের ভ্যানে আগুন দিয়েছে হরতালকারীরা। সিলেটে পুলিশের একটি মোটরবাইক জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। ফেনী, বরিশাল, রাজশাহী, সাভার, টঙ্গীতেও পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। হরতালে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোর থেকেই প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে মাঠে রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ।

রাজধানীতে বিক্ষিপ্ত পিকেটিং: সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষিপ্তভাবে পিকেটিং করেছেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জামায়াত-শিবির কর্মীরা শান্তিনগর মোড়ে বাস ভাঙচুর করে। সেখান থেকে তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
যাত্রাবাড়ি এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ফার্মগেটে সকালে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিং করার চেষ্টা করে হরতালকারীরা। সকাল ৮টার দিকে মহাখালী এলাকায় শাহীন কলেজের সামনে বাসে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।
এর আগে খিলগাঁওয়ে পুলিশ-পিকেটার সংঘর্ষে চারজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ভোরে রাজধানীর হোটেল রূপসীবাংলার সামনে একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায় পিকেটাররা।
ঢাকার বাইরে বিক্ষিপ্ত ঘটনা: ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় হরতালকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে জামায়াতকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সকালে সাভারে একটি শ্রমিকবাহী বাসে আগুন দেয় জামায়াত কর্মীরা। নয়াহাট এলাকায় হরতালের সমর্থনে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত সমর্থকরা। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভোর থেকে অবরোধ ও গাড়ি ভাঙচুর করে হরতালকারীরা। জামায়াত ও শিবিরের কয়েক শ’ নেতাকর্মী ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক ও ছানারপাড় এলাকায় অবস্থান নেয়। তারা কয়েকটি স্পটে টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয় ও কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশের সামনেই জামায়াত নেতাকর্মীরা সড়কে মিছিল করে। জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীদের অবস্থানের কারণে ভোর সাড়ে ৬টা হতে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা চণ্ডীপুর, তারানা সিএনজি স্টেশন ও রেলস্টেশন এলাকায় ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর ও ২টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। পিকেটারদের দমাতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হন। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গির হোসেন মার্কেট এলাকায় হরতাল সমর্থকরা একটি মিছিল করে। এসময় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোসেন মার্কেট এলকায় বেশ কয়েকটি টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিনোদপুর এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটে। পৌনে আটটার দিকে নগরীর পাখলিয়া থানার নতুন ব্রিজ এলাকায় হরতাল সমর্থক পিকেটাররা চারটি যানবাহন ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ এক শিবির কর্মীকে আটক করে। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

No comments

Powered by Blogger.