মেট্রো রেল-শুভস্য শিঘ্রম

দেশের প্রথম মেট্রো রেল প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে জাপানের অনুমোদন যে ঢাকায় স্বস্তির বাতাবরণ তৈরি করবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত রোববার এ সংক্রান্ত নথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
জানা যাচ্ছে, ২.৭ বিলিয়ন ডলারের এই মেগা প্রকল্পে জাপান একাই ২.১ বিলিয়ন ডলার জোগাবে। ধারণা করা যায়, সিংহভাগ অর্থ নিশ্চিত হওয়ার খবর প্রকল্পটিতে অন্যান্য দাতা গোষ্ঠীকে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করবে। কেবল কারিগরি ও আর্থিক স্বস্তি নয়, এর মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎও উজ্জ্বল হলো। এই আমলে গৃহীত বৃহত্তম বিনিয়োগ পরিকল্পনা পদ্মা সেতু প্রকল্প যখন বহুমাত্রিক জটিলতায় আটকে আছে, তখন দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে সাফল্যের খবর আসন্ন নির্বাচনে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে। অবশ্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি সাধারণ নাগরিকের। মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে মহানগরজুড়েই। আমরা অবগত, গণপরিবহনের ঘাটতি ও ব্যক্তিগত বাহনের আধিক্যে ঢাকায় কী ভয়ানক যানজট সৃষ্টি হয় এবং তাতে করে কীভাবে প্রতিদিন মূল্যবান কর্মঘণ্টা অপচয় হয়। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের মেট্রো রেল প্রকল্পটি যদি প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করতে পারে, যানজট-লাঞ্ছিত রাজপথ এর সুফল পেতে বাধ্য। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্টরা এর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করত সক্ষম হবেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পে যেসব কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে, এ ক্ষেত্রে তার পুনরাবৃত্তি হওয়া চলবে না। সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিত্বরা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। এটা ঠিক যে, রুট সংক্রান্ত জটিলতায় ইতিমধ্যে তিন বছর বিলম্ব হয়েছে এবং প্রকল্প ব্যয়ও এক বিলিয়ন ডলার বেড়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে গতি, উদ্যম ও আন্তরিকতা দিয়ে সেই ক্ষতি যতদূর সম্ভব পুষিয়ে নেওয়া কঠিন নয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন যত দ্রুত হবে, ততই মঙ্গল। শুভস্য শিঘ্রম।

No comments

Powered by Blogger.