ছিনতাইকারী কেড়ে নিল প্রাণ- মেয়েকে নিয়ে বাড়ি যাওয়া হলো না শাহজাহানের

ইচ্ছে ছিল মেয়ে ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবেন। কিন্তু তাঁদের আর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হলো না ব্যবসায়ী শাহজাহান ভূঁইয়ার। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে রাজধানীর মিরপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হয়েছেন তিনি।


শাহজাহান ভূঁইয়া পুরান ঢাকার ইসলামপুরে থান কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শ্যামনগরে। তাঁর বড় মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার তিন সন্তানকে নিয়ে মিরপুর ৬ নম্বরের ৩ নম্বর সড়কে থাকেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নিয়ে যেতে গত সোমবার রাতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি আনার পর মেয়ের বাসার ফটকের সামনে তিনি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন।
এর আগে ৯ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন সোয়েটার কারখানার কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান চৌধুরী। ওই ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ গতকাল পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহজাহান ভূঁইয়া মেয়ে ও এক নাতি, দুই নাতনিকে নিয়ে বাড়ি যেতে কমলাপুরে যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি আনতে গতকাল ভোরে মেয়ের বাসা থেকে বের হন। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি ট্যাক্সি নিয়ে ওই বাসার সামনে যান এবং তাঁদের ডাকেন। ইয়াছমিন ফটকের তালা খুলে বাইরে বের হওয়ার আগেই শাহজাহানকে ৮-১০ জন ছিনতাইকারী ঘিরে ধরে। তারা তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত চলে যায়। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি মারা যান।
শাহজাহানকে মৃত ঘোষণার পর শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েন স্বজনেরা। মূর্ছা যান ইয়াছমিন।
ইয়াছমিনের বরাত দিয়ে তাঁর চাচাতো বোন ইসরানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াছমিন তালা খুলে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনা বুঝতে পেরে তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকারও করেন। তাঁর চিৎকারে ওই বাড়ি ও আশপাশের লোকজন ছুটে এলেও ছিনতাইকারীদের হাতে অস্ত্র ও বোমা থাকায় কেউ কিছু করার সাহস পায়নি।
শাহজাহানের ভাগিনা ইব্রাহিম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ইয়াছমিনের স্বামী জহিরুল কাইয়ুম দক্ষিণ আফ্রিকা থাকেন।
মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল হক জানান, ওই ছিনতাইকারীরা কিশোর বয়সী বলে জানা গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.