ফিলিস্তিনের অনুদান আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনের জন্য বরাদ্দ অনুদানের ১৯ কোটি ২০ লাখ ডলার আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্য ও রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা অর্জনের খাতে এ অর্থ দেওয়ার কথা ছিল। স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রশ্নে ফিলিস্তিনের জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে 'অগোচরে' এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ওয়াশিংটনের এ সিদ্ধান্তকে 'অন্যায্য' আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, এ নিষেধাজ্ঞা ফিলিস্তিনিদের ওপর 'সমস্টিগতভাবে সাজা' দেওয়া।
এদিকে ফিলিস্তিনের আবেদনের ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গত শুক্রবার। এ ব্যাপারে একটি কার্যকর সিদ্ধান্তে পেঁৗছাতে কয়েক সপ্তাহ লাগবে। কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী চার পক্ষ 'কোয়াট্র্রেট'-এর প্রস্তাবিত সরাসরি আলোচনার অগ্রগতির ব্যাপারটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে চায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিনের আবেদনের ওপরে বিশ্লেষণমূলক একটি প্রতিবেদন তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। চলতি সপ্তাহে আরেক দফা বৈঠকে বসবে এ কমিটি।
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, ফিলিস্তিনের জন্য বরাদ্দ অনুদানের বাকি অর্থ ছিল ১৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের চলতি অর্থবছরের মধ্যে এ অর্থ ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর কথা ছিল। গতকাল ছিল অর্থবছরের শেষ দিন। পত্রিকাটির মতে, গত ১৮ আগস্ট থেকে তিনটি কংগ্রেশনাল কমিটি এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, কংগ্রেশনাল কমিটিগুলো নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়া পর্যন্ত মার্কিন সরকার পরবর্তী সময়ে আর কোনো সহযোগিতার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার কর্তৃপক্ষের প্রধান মুখপাত্র ঘাসান খাতিব বলেন, এটা মোটেও গঠনমূলক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এ ধরনের পদক্ষেপ অন্যায্য। তিনি বলেন, অনুদানের এ অর্থ মূলত মানবিক ও উন্নয়নবিষয়ক কাজের জন্য দেওয়া হতো। এটি বন্ধ করে দেওয়া মানে সমস্টিগতভাবে সাজা দেওয়া।
এদিকে জাতিসংঘে নিয়োজিত লেবাননের রাষ্ট্রদূত নওয়াফ সালাম জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিনের আবেদনের ব্যাপারে একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। সালাম সেপ্টেম্বর মাসের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এ ছাড়া ফিলিস্তিনের ব্যাপারটি দ্রুততার সঙ্গে গুরুত্ব সহকারে দেখার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন বলে একাধিক কূটনীতিক জানিয়েছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমা এক কূটনীতিক বলেন, পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যাবে এবং অবশ্যই এর সঙ্গে কোয়াট্র্রেটের অগ্রগতির সম্পর্ক রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে জমা দেওয়া আবেদনের ব্যাপারে আলোচনার জন্য লাতিন আমেরিকার একাধিক দেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তাঁর সফরসূচির মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাষ্ট্র কলম্বিয়া ও পর্তুগালও রয়েছে। সফরকালে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জঁ ম্যানুয়েল সান্তোসের সঙ্গে আব্বাসের বৈঠক করার কথা রয়েছে। এরপর হন্ডুরাস ও ডমিনিকান রিপাবলিক যাবেন আব্বাস। পাশাপাশি পর্তুগালও সফরের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। 

No comments

Powered by Blogger.