অ্যাশলে জডের ফ্লোরিডা by মাহফুজ রহমান

অ্যাশলে জডের ক্যারিয়ারের মূল ভিত্তিপ্রস্তরটি স্থাপিত হয়েছিল ফ্লোরিডায়। ১৯৯৩ সালের কথা। ছবির নাম ছিল রুবি ইন প্যারাডাইস। তার আগে অবশ্য আরও তিনটি ছবিতে নাম লিখিয়েছিলেন এই মার্কিন অভিনয়শিল্পী। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্টার ট্রেক: দ্য নেক্সট জেনারেশন। ছবিটির দুটি কিস্তিতে অভিনয় করেছিলেন জড। তবে নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে তাঁর জন্য ডানা হিসেবে কাজ করেছিল ওইরুবি ইন প্যারাডাইস। ছবিটিতে ভালো অভিনয়ের সুবাদে জুটেছিল সমালোচকদের বাহবা, আর ‘ইনডিপেনডেন্ট স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট লিড’ ফিমেলের মতো সম্মাননা। তাই ফ্লোরিডার সমুদ্রতীরকে নিজের অঙ্কুরোদ্গম ভূমি বলেই মানেন জড।

২৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে জডের নতুন ছবি ডলফিন টেল। ঘটনাচক্রে এই ছবিটির লোকেশনও ছিল ফ্লোরিডা। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর সেই প্রিয় জায়গায় ফিরে গিয়ে পুরোনো কিছু স্মৃতিতে ডুব দিয়েছিলেন এই তারকা। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, ফ্লোরিডায় যেন নিজেকেই খুঁজে পান তিনি, ‘হ্যাঁ, স্বীকৃত অভিনয়শিল্পী হিসেবে এখান থেকেই পথচলা শুরু হয়েছিল। তাই জায়গাটা খুব আপন আমার কাছে। আবার এখানে অভিনয় করতে এসে খুব ভালো লাগল। ফিরে গিয়েছিলাম সেই পুরোনো দিনে। খুব বেশি যে পরিবর্তন লক্ষ করছি, তা নয়। কেবল হোটেল ভাড়াটাই মনে হয় একটু বেড়েছে।’ ফ্লোরিডা বদলে যাক বা না যাক, এই ১৭ বছরে অ্যাশলে জড পরিবর্তিত হয়েছেন প্রতিনিয়তই। এবং শাণিত করেছেন নিজেকে অভিজ্ঞতার পাথরে ঘষে। তার প্রমাণ মেলে নতুন ছবি ডলফিন টেল-এও। কেননা এত দিন জডকে বেশির ভাগ সময় দেখা গেছে থ্রিলার কিংবা মারদাঙ্গা গোছের ছবিতেই। এদিকে চার্লস মার্টিন স্মিথ পরিচালিত সত্য কাহিনি অবলম্বনে তৈরি ডলফিন টেল পুরোদস্তুর পারিবারিক ছবি (ফ্যামিলি ড্রামা ফিল্ম)। এখানে জডকে দেখা যাবে লরেইন নেলসন নামের এক সেবিকার চরিত্রে, যার কিশোর ছেলে সয়ার নেলসন বন্ধু পাতিয়ে ফেলে দুর্ঘটনায় পড়া এক বোতলনাক ডলফিনের সঙ্গে। লেজ নেই, তাই জীবন নিয়ে সংশয় উইন্টার নামের ওই প্রাণীটির। শেষমেশ জডের ছেলে সয়ার তার আশপাশের সবার কাছেই ছুটে যায় বন্ধুকে বাঁচানোর আশায়। ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন ড. ম্যাককার্থি (মরগ্যান ফ্রিম্যান)। মেরিন হাসপাতালে তিনি উইন্টারের জন্য তৈরি করে দেন নকল লেজ।
মজার ব্যাপার হলো, শুটিংয়ে নামার আগে পর্যন্ত জড জানতেন না, ডলফিন টেল ছবিটির চিত্রনাট্য পুরোপুরি সত্য কাহিনি অবলম্বনে গড়ে উঠেছে। যখন জানলেন, তখন তো পারলে চিত্রনাট্যকার ক্যারেন জ্যানসজেন ও নাওম ড্রোমির বারোটা বাজিয়ে দেন! কিন্তু কেন? উত্তর দিলেন জড, ‘চিত্রনাট্য পড়ে আমি কেঁদেছি! এত আবেগপ্রবণ একটা গল্প, হূদয়ের কোথায় যেন ওলট-পালট করে দিয়ে যায়। কিন্তু কাজ শুরুর আগেও জানতাম না, এটা সত্যি গল্প অবলম্বনে লেখা। সেটা জানলে অভিনয়ই হয়তো করতাম না! এত কষ্টের একটা গল্প, তার ওপর উইন্টার (ডলফিন) নিজেই ছবিটিতে অভিনয় করেছে। এমন একটা কাহিনি কী করে এভাবে লেখে মানুষ! ইচ্ছা করেছিল চিত্রনাট্যকারদের বারোটা বাজিয়ে দিই।’ ডলফিন টেল-এর গল্প জডকে যেমন ছুঁয়ে গেছে, ছুঁয়ে গেছে দর্শকদের হূদয়ও। তার প্রমাণ মেলে বক্স অফিসে। ব্র্যাড পিটের বহুল আলোচিত মানিবল ছবির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ছবিটি। এ সপ্তাহের হলিউড টপচার্টে ডলফিন টেলের অবস্থান ৩ নম্বরে। সূত্র: ইয়াহু মুভিজ, দ্য রেড কারপেট ও উইকিপিডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.