'আইএস' হুমকিতে বিমানে ল্যাপটপ নিষিদ্ধ!

আমেরিকান গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমানে সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে- এমন গোয়েন্দা তথ্যের কারণেই বিমানের ক্যাবিনে বড় আকারের কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্র বহন করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমেরিকা এবং ইউকে নির্দিষ্ট কিছু যাত্রীবাহী বিমানে যাত্রীদের ল্যাপটপ সাথে নিয়ে বিমানে ওঠার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আমেরিকান সূত্র বলছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী (আইএস) ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের মধ্যে বিস্ফোরক লুকিয়ে তা বিমানে নেয়ার জন্য তাদের কাজ চালাচ্ছে এমন তথ্য তাদের হাতে এসেছে। গোপন তথ্যে পাওয়া এই খবর আমেরিকা "প্রমাণিত'' এবং "বিশ্বাসযোগ্য" বলে মনে করছে।
আমেরিকায় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে ৮টি দেশের ১০টি বিমানবন্দর ব্যবহারকারী নয়টি এয়ারলাইন্সকে। আইএস-এর দিক থেকে হুমকির বিষয়টি আলোচনার জন্য ৬৮টি দেশের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দুদিন ধরে একটি বৈঠক করবেন, যে বৈঠক আয়োজন করছেন আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। এই বৈঠকে ট্রাম্প প্রশাসন ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে তাদের সমর্থনের বিষয়টি এবং প্রেসিডেন্ট তার পররাষ্ট্রনীতিতে বিষয়টিকে কতখানি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তা তুলে ধরবেন।
এই হুমকি সম্পর্কে কতটুকু জানা যাচ্ছে?
আমেরিকার হাউস ইনটালিজেন্স কমিটির একজন ডেমোক্রাট সদস্য, এরিক সোয়ালওয়েল, এবিসি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন "বিমানের জন্য নতুন হুমকি'' তৈরি হয়েছে।
"আমরা জানি আমাদের শত্রুরা, যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে এবং বাইরের উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো, যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমান ধ্বংস করতে চাইছে। এটাই তাদের জন্য অন্যতম সবচেয়ে মূল্যবান লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু সেটা যাতে না ঘটতে পারে সেটা ঠেকাতে আমরা সর্বতোভাবে চেষ্টা করছি।'' ওই কমিটির আরেকজন সদস্য, রিপাবলিকান পিটার কিং, নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে তাকে আগে হুঁশিয়ার করা হয়েছিল।
''এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বেশ সম্প্রতি পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে।'' বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার বলছেন ''গোয়েন্দা তথ্য মূল্যায়ন'' করার পর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর অর্থ হল আমেরিকান গোয়েন্দারা উগ্রবাদীদের সম্ভাব্য হামলার ষড়যন্ত্র নিয়ে আলোচনা হয় আড়ি পেতে শুনেছেন অথবা তাদের কোনো চরের মুখ থেকে এ তথ্য জেনেছেন।
কোন্ কোন্ এয়ারলাইন্স এর আওতায় পড়ছে?
আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছে নয়টি বিমান সংস্থার ফ্লাইট, যাদের মধ্যে রয়েছে রয়াল জর্ডানিয়ান, ইজিপ্ট এয়ার, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, সৌদি আরবিয়ান এয়ারলাইন্স, কুয়েত এয়ারওয়েস, রয়্যাল এয়ার মারোক, কাতার এয়ারওয়েস, এমিরেটস্ এবং এত্তিহাদ এয়ারওয়েস। আমেরিকান পদক্ষেপের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ব্রিটেনও যে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে তা অনেকটা একইরকম, তবে তাদের তালিকায় ব্রিটিশ এয়ারওয়েস এবং ইজি জেট এয়ারলাইন্স রয়েছে। ব্রিটিশ নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে তুরস্ক, লেবানন, জর্দান, মিসর, তিউনিসিয়া এবং সৌদি আরব থেকে যুক্তরাজ্যগামী যাত্রীবাহী ফ্লাইট। আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার আওতায় যে দশটি বিমানবন্দর পড়ছে
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় দশটি বিমানবন্দর
নিষেধাজ্ঞার আওতায় দশটি বিমানবন্দর
মোহাম্মদ ইন্টারন্যাশানাল, কাসাব্লাঙ্কা, ব্মরক্কো
আতার্তুক বিমানবন্দর, ইস্তানবুল, তুরস্ক
কায়রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মিসর
কুইন আলিয়া আন্তর্জাতিক, আম্মন, জর্দান
কিং আবদুলআজিজ আন্তর্জাতিক, জেদ্দা, সৌদি আরব
কিং খালিদ আন্তর্জাতিক, রিয়াদ, সৌদি আরব
কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দোহা, কাতার
আবু ধাবি আন্তর্জাতিক, সংযুক্ত আরব আমিরাত
দুবাই আন্তর্জাতিক, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সূত্র : বিবিসি

No comments

Powered by Blogger.