নিরাপরাধ ছাত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাজাতেই অস্ত্র উদ্ধার নাটক : শিবির

চট্টগ্রাম নগরের সরকারি কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের ছাত্রাবাসে
পুলিশি অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় আটক কয়েকজনকে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবিটি আজ সকাল আটটার দিকে হাজী মুহাম্মদ মহসিন
কলেজ থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ, প্রথম আলো, চট্টগ্রাম
অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডি নিউজ, বাংলানিউজ ও কিছু ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় “চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ৭২ শিবির কর্মী আটক, বিপুল অস্ত্র উদ্ধার” উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল মো. আতিকুর রহমান বলেন, গণধিকৃত সরকার দেশ ধংসের পর এখন অস্ত্র উদ্ধার নাটক সাজিয়ে মেধাবী ছাত্রদের ভবিষ্যত ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আর দুঃখজনক ভাবে এই নিকৃষ্ট নাটকে মূল ভূমিকা পালন করছে পুলিশ ও দলকানা কিছু গণমাধ্যম। প্রতিবেদনগুলোতে সেবাদাস পুলিশের মিথ্যা বক্তব্যকে পুঁজি করে বলা হয়েছে, তথাকথিত অস্ত্র উদ্ধারের সাথে ছাত্রশিবিরের সম্পর্ক আছে। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও সাজানো। এসব অস্ত্রের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। তাছাড়া অস্ত্রগুলো ছাত্রশিবিরের কোন নেতাকর্মীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়নি। এমনকি ছাত্রবাস থেকেও নয়। বরং এগুলো উদ্ধার করা হয়েছে গভীর রাতে পার্শবর্তি আবাসিক এলাকার একটি তিনতলা বাড়ীর পেছনে গর্ত থেকে। অন্যদিকে মাটির গর্তের ভিতর থেকে একটি ব্যানারে মোড়ানো অস্ত্রের বস্তা পাওয়ার কথা বলা হলেও, ছবিতে দেখা যাচ্ছে ব্যানারটিতে সামান্য মাটিও লেগে নেই বরং তা ঝকঝকে পরিস্কার। এতে প্রমাণ হয় বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যানারটি বাইরে থেকে এনে বস্তার সাথে মোড়ানো হয়েছে। অথচ কলেজের বাইরে গভীর রাতে এ অস্ত্র কারা রাখল, কি উদ্দেশ্যে রাখলো তার কোন যাচাই বাছাই না করেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ৭২জন মেধাবী কলেজ ছাত্রকে। আর এসব গণমাধ্যমও বিবেকের দরজায় তালা মেরে অন্ধভাবে এখানে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে। সুতরাং এ নাটক সাজানো হয়েছে পরিকল্পিত ভাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
নেতৃবন্দ বলেন, একই রাতে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের দু গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্য গুলাগুলিতে বেশ কয়েকজন মারাতœক আহত হলেও সেখানে পুলিশ কোন অভিযান পরিচালনা দূরে থাক একজনকে গ্রেপ্তারও করেনি। অথচ সুক্ষè ভাবে চট্টগ্রাম কলেজে নাটক পরিচালনা করেছে। দেশবাসী দেখে এসেছে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের উৎপাত না থাকায় সেখানে সব সময়ই শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ বিরাজ করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি ছাত্রলীগ অবৈধভাবে সেখানে অবস্থানের চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু সাধারাণ ছাত্ররা প্রত্যাখান করায় তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন এটা পরিস্কার যে, ছাত্রলীগকে অবৈধ অবস্থান করে দিয়ে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতেই এই নাটক সাজানো হয়েছে। আর এই অমানবিক নাটকের শিকার হয়েছে ৭২জন ছাত্র যাদের বেশির ভাগই পরীক্ষার্থী। জাতির জন্য লজ্জার বিষয় হলো মেধাবী ছাত্রদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসকারী এই নাটকে সরাসরি মূল ভূমিকা পালন করছে পুলিশ ও কিছু গণমাধ্যম। এসব নিরাপরাধ মেধাবী ছাত্রদের সামান্যতম ক্ষতি হলে সরকার ও পুলিশের মত এসব দায়িত্ব বিসর্জনকারী গণমাধ্যমও সমান ভাবে দায়ী থাকবে।
নেতৃবৃন্দ কারো অপপ্রচারের হাতিয়ার না হয়ে সত্য প্রকাশের স্বার্থে এ ধরণের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকবৃন্দ ও গণমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানান এবং নিরপরাধ ছাত্রদের মুক্তি দিয়ে তাদের পড়াশুনা অব্যাহত রাখার সুযোগ দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.