পতন না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ -রিজভী

বর্তমান জনপ্রতিনিধিত্বহীন সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বলেছে বিএনপি। গতকাল সকালে এক বিবৃতিতে দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বিএনপির এ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ভয়ঙ্কর দুঃশাসনের কবল থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়াই চলমান আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্যে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বর্তমান অবৈধ সরকার অপসারণ করে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন না হওয়া অবরোধ কর্মসূচি চলবে। বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাব, যে যেখানে যে অবস্থানে আছেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করুন। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে এ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। রিজভী আহমেদ বলেন, অবরোধকারীরা ন্যায় ও সত্যের পক্ষে। তারা জুলুমবাজ রাষ্ট্রশক্তির অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। উদ্দেশ্য একটাই- দেশে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা। সারা দেশে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন আমাদের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা নিজেরা নাশকতা ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এভাবে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। আমরা অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় উচ্চপদ নেতা ও মন্ত্রীদের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসিত ও অশ্রাব্য ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন। আমি তাদের এহেন বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দেশের জনগণই একদিন তাদের ওইসব নোংরা বক্তব্যের জবাব দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। উল্লেখ্য, গত ৫ই জানুয়ারি গুলশানের অবরুদ্ধ কার্যালয় থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এদিকে পৃথক বিবৃতিতে রিজভী আহমেদ বিএনপি ও ২০-দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও তাদের মুক্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, জোর জবরদখলকৃত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য অবৈধ সরকারের জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নোয়াখালী জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ এবং জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা আহসান হাবিব লিংকনকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। এদিকে বিএনপি ও জোটের নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ২০-দলের শরিক এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা। গতকাল এক বিবৃতিতে তারা বলেন, যতই গ্রেপ্তার বাড়বে আন্দোলনের তীব্রতা ততই বাড়বে। রাত গভীর হয়েছে সকালের সূর্য খুবই কাছাকাছি। অবৈধ সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তারা রাজপথে অবস্থান করে দেশবাসীকে বর্তমান সরকারকে হটানোর আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.