প্যারিসে কাছাকাছি তাঁরাও

প্যারিসের রাজপথে হাতে হাত ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হেঁটে চলেছে লাখ লাখ মানুষ। একেবারে সামনের সারিতে বিশ্বনেতারা। তাঁদের মধ্যে আছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও। দুজনের মধ্যে ব্যবধান মাত্র হাত কয়েক। ফ্রান্সে গত রোববারের সন্ত্রাসবিরোধী ঐতিহাসিক শোভাযাত্রার সময় এমনই দৃশ্য দেখা গেল। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা ভেঙে পড়ার পর গত কয়েক বছরের মধ্যে এটা ছিল বিরল একটা দৃশ্য। আগের সপ্তাহটা দুঃস্বপ্নের মতো কাটার পর ফ্রান্সের কাছে রোববারের শোভাযাত্রায় নজিরবিহীন সাড়া মেলে। এদিন সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দৃশ্যপটগুলোর একটি হয়ে ওঠে সংহতি শোভাযাত্রা নেতানিয়াহু ও আব্বাসের অনেকটা কাছাকাছি হয়ে হাঁটার ঘটনা। খবর এএফপির। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের নেতৃত্বে প্রায় ৫০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার- প্রধানেরা যখন শোভাযাত্রার সামনে হাতে হাত রেখে হাঁটতে শুরু করেন, তখনই দেখা যায় ওই বিরল দৃশ্য। নেতানিয়াহু ও আব্বাসকে গত চার বছর এতটা কাছাকাছি হতে দেখেনি বিশ্ব। শোভাযাত্রায় সামনের সারিতে দুজনের মাঝখানে ছিলেন মাত্র চারজন: মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোবাকার কেইতা, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, জামার্নির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। পশ্চিমাদের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা ভেঙে পড়ার পর গত চার বছর নেতানিয়াহু ও আব্বাসের মধ্যে মুখোমুখি কোনো বৈঠকও হয়নি। এর মধ্যে গত বছর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসনের পর দুই নেতার মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। আর সাম্প্রতিক সময়ে দখলকৃত ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তুললেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়। এর জবাবে আব্বাস আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতসহ (আইসিসি) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভের জন্য আবেদন করেন। এতে করে আব্বাসের প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হন নেতানিয়াহু। অবশ্য প্যারিসে চিরশত্রু নেতানিয়াহু ও আব্বাসই কেবল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শোভাযাত্রা করেছেন, বিষয়টি তেমন নয়। একই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভও। ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই নিয়ে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেন দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.