১৪ দলের বৈঠকে সংলাপ নিয়ে আলোচনা

বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে আওয়ামী লীগকে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন ১৪ দলের কয়েকজন নেতা। গতকাল ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠকে তারা এ আহ্বান জানান। বৈঠকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ১৪ দলের শরিক কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম। বৈঠক সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের অন্তত ৪ জন নেতা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমকে বিএনপি’র সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে জেপি’র মহাসচিব বৈঠকে বলেন, রাজনীতিতে আলোচনার পথ বন্ধ করা উচিত নয়। বিএনপি’র যে অবস্থান তা বিবেচনায় নিয়ে তাদের জন্য একটি ‘এস্কেপ রোড’ তৈরি করে দিতে হবে। যাতে তারা পরিস্থিতি উত্তরণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা পায়। এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসিত বরণ রায় বলেন, খালেদা জিয়ার দাবি অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশে আর ফিরে আসবে না। এটা তিনিও ভালভাবে জানেন। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি নিয়েও সরকার কোন আপসে যাবে না। এটাও বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব অবগত আছেন। সেই প্রেক্ষিতে এ বিষয়গুলো মেনে নিয়ে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যদি খালেদা জিয়া আসতে চান তাহলে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসা যেতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত ১৪ দলের একাধিক নেতা বিষয়টি সমর্থন করেন। তবে মোহাম্মদ নাসিম বা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ১৪ দলের নেতাদের বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।  বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এনামুল হক শামীম, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কার্যকরি সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, গণআজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসকে শিকদার প্রমুখ।
পাড়া-মহল্লায় কমিটি করবে ১৪ দল
সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করতে ও তাদের ধরিয়ে দিতে পাড়া-মহল্লায় কমিটি গঠন করবে বলে জানিয়েছে ১৪ দল। গতকাল ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের এক বৈঠক শেষে এ কথা জানান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। একই সঙ্গে বিএনপিকে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি’র মিথ্যাচার থেকেই বোঝা যায় রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের আচরণ তৃতীয় শ্রেণীর রাজনৈতিক দলের মতো। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি এখন তৃতীয় শ্রেণীর রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তাদের জন্য করুণা হয়। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নির্দেশে আজকে বাংলাদেশে কি হচ্ছে। তিনি নিজে অবরুদ্ধ হবার নাটক করে তার সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। তার নির্দেশে চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে। তবে কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও দেশের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। বিএনপি’র অবরোধের সমালোচনা করে নাসিম বলেন, তাদের কর্মকাণ্ড কোন রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। জ্বালাও- পোড়াও এগুলো কাপুরুষোচিত কর্মকাণ্ড। এদের কোন চরিত্র  নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন পরাজিত সেনাপতি। তার ডাকে মানুষতো দূরের কথা তার দলের নেতাকর্মীরাই আসে না। তিনি বলেন, ভুয়া অমিত শাহ্‌ সাজিয়ে যে কাণ্ডটি তারা করলো তাতে বাঙালি হিসেবে আমরা লজ্জা পেয়েছি। জাতি ছোট হয়েছে। তারা লজ্জা পেয়েছে কি-না জানি না। এরপরও তারা মিথ্যাচার করেই চলেছে। সহিংসতার পথ পরিহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ১৫ই জানুয়ারি আমরা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসব। পাড়া-মহল্লায় ১৪ দলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের ধরতে কমিটি গঠন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীও আমাদের সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কার্যকরি সভাপতি বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তিনি বলেন, ’ল এন্ড অর্ডার সিচুয়েশন ঠিক রাখতে পুলিশ এখন পায়ে গুলি করছে। ক’দিন পরে বুকে গুলি করবে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, অমিত শাহ ফোন না করলেও উনি (খালেদা জিয়া) ফোন ধরেন, আর প্রধানমন্ত্রী ফোন করলে বলেন, রেড ফোন নষ্ট। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এনামুল হক শামীম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, গণ-আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসকে শিকদার, ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.