চট্টগ্রাম বন্দরে তেজস্ক্রিয় কনটেইনার নিয়ে প্রশ্ন by মহিউদ্দীন জুয়েল

চট্টগ্রাম বন্দরে ৫ মাস ধরে এক কনটেইনার নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পণ্যে উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া যাওয়ায় কনটেইনারটি সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জোর আলোচনা চলছে চট্টগ্রামে। পণ্যের বিকিরণ থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে, যা মানুষের শরীরের কোষ ধ্বংস করে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ভারতে রপ্তানির পথে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে এক কনটেইনার পণ্যে উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে সেখানকার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে ফেরত পাঠায়। এ সময় তারাও তদন্ত করে উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। রপ্তানি হওয়া পণ্যে উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়ার ঘটনায় চিন্তিত বন্দর কর্তৃপক্ষ। একটি সূত্র জানায়, শনাক্ত হওয়া কনটেইনারটির নম্বর হলো টিএসএইউ ২৬০০৫০০। এতে প্রায় ১৯ টন পুরনো লোহার পণ্য রয়েছে। যার মাত্রা খুবই বেশি। চট্টগ্রামে তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান এম মনিরুল ইসলামের কাছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিবেদনটি শুল্ক বিভাগে পাঠানোর পর সরকার থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর ঠিকানা উদ্ধার করে জানা যায়, চট্টগ্রামের ভাটিয়ারি কদমরসুল এলাকার মাবিয়া স্টিল কোম্পানি এ পণ্যের রপ্তানিকারক হিসেবে কাগজে-কলমে উল্লেখ করা হয়েছে। গন্তব্য লেখা হয়েছিল ভারতের তারাপুর শিল্প এলাকার ভিরাজ প্রোফাইলস লিমিটেডের কাছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে এসব পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়ে, যা কলম্বো বন্দর হয়ে ভারতের নভোসেবা বন্দরে পাঠানোর কথা। বন্দর সূত্র জানায়, ভারতের নভোসেবা বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রামের সরাসরি কনটেইনার পরিবহন নেই। তাই দীর্ঘদিন ধরে কলম্বো বন্দরের মাধ্যমে কনটেইনার আনা- নেয়ার কাজটি হয়ে আসছে। শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়ার বিষয়টি উঠে আসে গত বছরের ২৯শে এপ্রিল। পরে এক প্রতিবেদনে তারা জানায়, কনটেইনারের এক বা একাধিক পণ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থের দূষণ রয়েছে। পরে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারটি ফেরত এলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। বর্তমানে তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষা ছাড়াই কিভাবে এত পরিমাণ পণ্য পাঠানো হলো দেশের বাইরে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। কেননা চট্টগ্রাম বন্দরেও পরীক্ষার একটি যন্ত্র রয়েছে। যে কোন পণ্য রপ্তানির আগে তেজস্ক্রিয়তার সনদ নেয়ার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা হয়নি বলে নিশ্চিত করেন বন্দরের এক কর্মকর্তা। তবে দু-একদিনের মধ্যে কনটেইনারটি খোলা হতে পারে বলে ধারণা অনেকের। যাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে সেই মাবিয়া স্টিল কোম্পানি দাবি করেছে, ঢাকায় যেখান থেকে পণ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেখানে তেজস্ক্রিয়তার দূষণ মিশ্রণ হয়েছে। জানতে চাইলে কোম্পানির কর্ণধার মো. দিদারুল আলম বলেন, এটি আমাদের কোন দোষ নয়। যেসব পণ্য কনটেইনারে ঢোকানো হয়েছে সেগুলো ঢাকা থেকে কেনা। তারাই হয়তো এমন কাজটি করেছে।

No comments

Powered by Blogger.