রক্তভেজা সেই স্কুলে আবার কচিকাঁচাদের মেলা!

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্যের রাজধানী পেশোয়ারে রক্তেভেজা সেই আর্মি পাবলিক স্কুলে আবার ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার খুলে দেয়া হয়েছে স্কুলটি। শোকে বিবর্ণ পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুল আবার প্রাণোচ্ছ্বল হয়ে উঠেছে কচিকাঁচাদের মেলায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল রাহেল শরিফ এ দিন স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ভীতি দূর করতে তাদের সঙ্গে গল্প করেন তিনি। পাকিস্তানে ওই বিদ্যালয়ে জঙ্গি হামলার পর দেশের বিদ্যালয়গুলোর শীতকালীন ছুটি আরও বাড়ানো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ২৬ দিন বন্ধের পর এদিন পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পেশোয়ার নগরীর বিদ্যালয়গুলোতে সোমবার সকালে আবারও ক্লাস শুরু হয়েছে। আর্মি পাবলিক স্কুলের প্রধান ফটকে কমপক্ষে ২০ জন সৈন্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। সেখানে বিমানবন্দর ধাঁচের নিরাপত্তা ফটক স্থাপন করা হয়েছে। তবে এক দিনেই তো আর সেই বীভৎস রক্তাক্ত স্মৃতি ভোলা যাবে না।
তালেবান জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের সামনে মর্মান্তিকভাবে খুন করেছে তাদেরই সহপাঠী-বন্ধুদের। স্কুলটির ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে আজ ১৪২ জন আসবে না। তারা আর কোনো দিনই আসবে না। গত ১৬ ডিসেম্বর তালেবানের বর্বর বন্দুক-বোমা তাদের পাঠিয়ে দিয়েছে চিরতরে না ফেরার দেশে। আর্মি পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাও আর কোনো দিনই তার প্রাণের শিক্ষার্থীদের মাঝে ফিরবেন না। তিনিও তার শিশুশিক্ষার্থীদের সঙ্গে খুন হন তালেবান হামলায়। গত মাসের সেই হামলায় মোট ১৪৯ জন মারা যান। এদিকে আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলার পর থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ একযোগে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। ডন অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা নিশ্চিতের শর্তগুলো পূরণ করতে পারেনি। কারণ সব প্রতিষ্ঠানের সেই সামর্থ্য নেই। সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে বাড়িতে বাড়িতে প্রার্থনা করছেন অভিভাবকরা।

No comments

Powered by Blogger.