‘গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চাইলে পতনও গায়ের জোরে’ by কাজী সুমন

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক বলেছেন, গায়ের জোরে কেউ ক্ষমতায় থাকতে চাইলে তার পতনও হয় গায়ের জোরে। ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতায় আসা সরকারের পতনে মানুষ রাস্তায় নামার অপেক্ষায় আছে। গ্রামে-গঞ্জে তারা বিএনপিকে গালিগালাজ করছে। বিএনপির ওপর একটা বিশ্বাস থেকেই মানুষের এই হতাশা। একসময় মানুষ আর বিএনপির নির্দেশের অপেক্ষায় থাকবে না। তারা নিজেরাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া  যায় না। তখন প্রশাসনও চোখ-কান বন্ধ করে সরকারকে সমর্থন দেবে না। তারাও প্রতিবাদ করবে। মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। অগোছালো সংগঠন নিয়ে আন্দোলন সফল করার বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের জন্য সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু সংগঠন ছাড়াও আন্দোলন সফল করা যায়। আমরা যে ইস্যুতে আন্দোলন করছি সেটা গোটা দেশের মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। মানুষ এখন প্রতিবাদী হয়ে গেছে। যেখানেই বিএনপি চেয়ারপারসন যাচ্ছেন সেখানেই লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, মানুষ এখনও মনে করে, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কারণ তাদের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে। এদেশে ভোট শুরু হলে মানুষের মধ্যে উৎসব দেখা দেয়। ৭৫-৮০ ভাগ মানুষ ভোট দেয়। তাদের ভোট দিতে না পারায় মানুষ এখন ক্ষিপ্ত। আওয়ামী লীগের উদ্দেশে ওসমান ফারুক বলেন, গণআন্দোলনের ধারা-প্রকৃতি জ্যামিতিক হিসেবে করা যায় না। শেখ হাসিনার বোঝা উচিত- পাকিস্তান আমল থেকে বাংলাদেশে কিভাবে আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলন সময় নিতে পারে কিন্তু শেষ হয়ে যায় না। কেউ যদি গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায় তাহলে তার পতনও গায়ের জোরে হয়। বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, আন্দোলন সফল হতে হাজারও মানুষের প্রাণ দিতে হয় না। নূর হোসেন, ডা. মিলনসহ কয়েকজনকে হত্যার পরেই স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন হয়েছিল। একজন মানুষ মৃত্যুর ফলেই সরকার পতন হয়ে যায়। অথচ এই সরকার শ’ শ’ মানুষ মেরে ফেলেছে। তারা যদি মনে করে এটাই উপায় তাহলে তাদের পতন সময়ের ব্যাপার। ওসমান ফারুক বলেন, যে সরকারের জবাবদিহি থাকে না তারা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকে। দেশের সর্বত্র লুটপাট চলছে। কিছু পরিবারের কাছে দেশের সম্পদ চলে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের ৫১ হাজার পরিবার নাকি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। দেশের বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ কমে গেছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে জিডিপির বৃদ্ধির হার কমে গেছে। সরকার এভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইলে তাদের পতনও হবে অনাকাক্সিক্ষতভাবে। আন্দোলন ঠেকাতে সরকার যদি এবারও দমন-পীড়ন নীতি অবলম্বন করে তাহলে বিএনপির কৌশল কি হবে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, সবসময় একই কৌশল কাজ করে না। যদি একই কৌশল কাজ করতো তাহলে আইয়ুব খান ও এরশাদের পতন হতো না। শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল করে সারাজীবনই ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। কিন্তু পারেননি। এদেশের মানুষ প্রতিবাদী ও মুক্তিকামী। সাধারণ মানুষ এখন আর ভাত-কাপড়ের রাজনীতি করে না। তারা এখন অনেক সচেতন।

No comments

Powered by Blogger.