এটা দুর্ঘটনা নয়, হত্যা by ড. মাহবুব উল্লাহ্

প্রথিতযশা সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী আমাদের মধ্যে আর নেই। মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় তার অকাল মৃত্যু হয়েছে। বয়সে আমার অনুজ এই মানুষটি আর আমাদের মধ্যে নেই একথা ভাবতেও পারি না। সদাহাস্য, সদালাপী, কোমল স্বভাবের এ মানুষটির আর দেখা পাব না। এটি ছিল আমার সব চিন্তার অতীত। জন্ম, মৃত্যু বিধাতার অমোঘ নিয়মে চলে। এ নিয়মের পরিবর্তন ঘটানোর সাধ্য আমাদের নেই। সবই মহান আল্লাহতায়ালার ইচ্ছা। বেঁচে থাকা মানে পলে পলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া- জীবন-মৃত্যুর এ দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক নিয়ে দার্শনিকরা যা বলেছেন তার চেয়ে চির সত্য আর কী হতে পারে? জগ্লুলের মৃত্যুতে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। জগ্লুল মাতৃভাষা এবং আন্তর্জাতিক ইংরেজি উভয় ভাষাতেই সমান পারঙ্গম ছিলেন। এরকম যোগ্যতাসম্পন্ন নিষ্ঠাবান সাংবাদিকের সংখ্যা ক্রমান্বয়েই হ্রাস পাচ্ছে।
জগ্লুল ও আমি ছিলাম ভিন্ন পেশার মানুষ। তিনি করতেন সাংবাদিকতা আর আমি করতাম শিক্ষকতা। ভিন্ন পেশার মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। দেখা হলেই জগ্লুল সহাস্য বদনে জিজ্ঞেস করতেন, মাহবুব উল্লাহ ভাই কেমন আছেন। তার এ জিজ্ঞাসা নিছক আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। আনুষ্ঠানিকতাকে অতিক্রম করে তার কথার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠত গভীর আন্তরিকতা। তার সঙ্গে আমার বিশেষত দেখা হতো বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সেমিনারগুলোতে। জগ্লুল আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন। তিনি ছিলেন এ বিষয়ের একজন মেধাবী ভাষ্যকার। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়টি ছিল তার নখদর্পণে। এজন্যই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে যখনই কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটত তখনই জগ্লুলের ডাক পড়ত তার গভীর বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা শোনার জন্য। এ বিষয়ে তিনি দৈনিক সংবাদপত্র, টেলিভিশন টকশো এবং সেমিনারগুলোয় অনেক প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং মর্মভেদী আলোচনা উপস্থাপন করেছেন। ভারতের নামকরা দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো তিনি গভীর অভিনিবেশ সহকারে নিয়মিত পাঠ করতেন। এর ফলে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ওপর, তিনি তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা করতে পারতেন। এছাড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির জটিল সম্পর্কের গ্রন্থিগুলোও তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে উন্মোচন করতে পারতেন। তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের সঙ্গে অনেক সময় একমত হতে পারতাম না। কিন্তু তার মতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করতাম। কারণ তিনি যে অভিমত ব্যক্ত করতেন, তা কোনোক্রমেই হালকা কিংবা স্থূল ছিল না। তার আলোচনা থেকে ঋদ্ধ হওয়ার প্রচুর অবকাশ থাকত। এভাবেই আমি তার বিশ্লেষণের একজন একাডেমিক ভক্তে পরিণত হয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে কী, তার বিশেষায়িত এলাকার ওপর আলোকপাত করার মতো মানুষ এখন বাংলাদেশে বিরল। তার মৃত্যুতে এমন মানুষের সংখ্যা আরও বিরল হয়ে পড়ল।
টিভির স্ক্রলে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুর খবরটি যখন প্রচারিত হচ্ছিল তখন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। যখন এ ধরনের চিন্তার অতীত ঘটনা ঘটে, তখন এ ধরনের অনুভূতিই সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ঢাকার কর্মব্যস্ত কেন্দ্রস্থল কারওয়ানবাজারে। রাজধানী ঢাকার অবিশ্বাস্য রকমের যানজট নাগরিক জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। কিন্তু এর মধ্যে ভালো কিছুও আমি দেখতে পাই। কারণ, যানজটের ফলে যানবাহনগুলোর গতি অত্যন্ত ধীর হয়ে পড়ে। যানবাহনের গতি যখন ধীর হয় তখন সড়ক অতিক্রমকারী পথচারীর দুর্ঘটনায় পড়ার সম্ভাবনা বহুলাংশেই হ্রাস পায়। সেজন্যই বোধহয় মহাসড়কের তুলনায় ঢাকার রাজপথে দুর্ঘটনার সংখ্যা খুবই নগণ্য। তবুও গত কয়েক দিনের সংবাদপত্রে সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকটি মৃত্যুর খবর এসেছে। এসব মৃত্যুর কারণ একদিকে যেমন পথচারীদের, অন্যদিকে তেমনি রয়েছে চালকদেরও অসাবধানতা। অসাবধানতা পরিহার করে সবাই যদি একটু সাবধানতা অবলম্বন করে তাহলে এরকম ট্র্যাজিক মৃত্যুও পরিহার করা যায়।
জনাব জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সদ্যসমাপ্ত সার্ক সম্মেলনের ওপর আলোচনা রেকর্ড করার জন্য কারওয়ানবাজারে আসছিলেন। আলোচনার উপস্থাপক মোবাইল ফোনে তার অবস্থান জানার জন্য ফোন করেছিলেন। জবাবে তিনি জানিয়েছিলেন, আমি কারওয়ানবাজারে পৌঁছে গেছি। তারপর আর তার তরফ থেকে কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি। উপস্থাপক চিন্তান্বিত হয়ে পড়েছিলেন। এর ফাঁকেই ট্র্যাজিক দুর্ঘটনাটি ঘটে গিয়েছিল। ইদানীং জগ্লুল নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতেই চলাফেরা করতেন। সর্বশেষ তিনি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু ট্র্যাজিক দিনটিতে তার গাড়ির চালক আসেনি বলে তিনি একটি মিনি বাসে চড়ে ঢাকা ক্লাব থেকে কারওয়ানবাজারের দিকে যাত্রা করেছিলেন। পত্রিকায় পড়লাম, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সোয়া আটটার দিকে বাংলামোটর হয়ে আসা একটি মিনিবাস কারওয়ানবাজারের সোনারগাঁও মোড়ে পুলিশের ট্রাফিক বক্সের সামনে থামে। জগ্লুল আহ্মেদ ওই মিনিবাস থেকে নামার জন্য পা বাড়ান। কিন্তু তিনি এক পা নামানোর সঙ্গে সঙ্গে বাসটি সজোরে টান দেয়। এতে তিনি সড়কে পড়ে গিয়ে ওই মিনিবাসের একপাশের সঙ্গে মাথায় প্রচণ্ড ধাক্কা খান। সড়কে ছিটকে পড়েন তিনি। মিনিবাসটি দ্রুত গতিতে ফার্মগেটের দিকে চলে যায়। তিন যুবক তাকে ধরাধরি করে রাজধানীর পান্থপথের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে গ্রিন রোডের আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ইমরুল কায়েস নামের এক যুবক প্রথম আলোকে বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কিছুক্ষণ সড়কেই পড়েছিলেন ওই যাত্রী (জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী)। মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল। তখন আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরি। হাসপাতালে নেয়ার জন্য কয়েকটি গাড়িকে হাত নেড়ে থামতে বললেও কেউ শোনেনি। পরে আমরা তিনজন ধরাধরি করে পান্থপথের একটি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসা না দেয়ায় আমরা গ্রিন রোডের আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাকে মৃত ঘোষণার পর আমি তার মুঠোফোন ঘেঁটে বিভিন্ন নম্বরে ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানাই। জানতে পারি, তিনি একজন বড় মাপের সাংবাদিক। ঘটনার পুরো বিবরণটি থেকে একটি সত্যই পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে, পুরো ঘটনাই বলে দেয় আমাদের সমাজ ভীষণ নির্দয় ও নির্মম হয়ে উঠেছে। আমি বলব, সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এরকম একজন প্রবীণ মানুষ যখন বাস থেকে নামার জন্য এক পা বাড়ান তখন বাসটি যদি সজোরে টান দেয় তাহলে তার পরিণতি কী হতে পারে সেটি নিষ্ঠুর বাস ড্রাইভার ও বাসের হেলপার কেউই ভাবতে চায়নি। তাই এটা একটি হত্যাকাণ্ড। জেনে বুঝে একজন জ্বলজ্যান্ত মানুষকে মেরে ফেলা। এ ধরনের আচরণ ঢাকার রাজপথে চলাচলকারী বাসগুলো প্রায়ই করে থাকে। ফলে কোন বয়স্ক মানুষের পক্ষে বাসে উঠে নিরাপদে নামতে পারাটা অলৌকিক ঘটনাই বটে।
গত কয়েক সপ্তাহে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে শৃংখলায় আনার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে চিন্তা-চেতনাহীন কিছু বিশৃংখল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে পরিস্থিতির তিলমাত্র উন্নতি হয়েছে বলে মনে হয় না। বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করা যেত। কিন্তু সেটি আজকের আলোচ্য বিষয় নয় বলে বিস্তারিত কিছু বলছি না। নিষ্ঠুরতার দ্বিতীয় দৃষ্টান্তটি হল রক্তাক্ত ও আহত অবস্থায় পড়ে থাকা মানুষটিকে সাহায্য করার জন্য চলন্ত মোটরকারগুলোকে হাত নেড়ে ইঙ্গিত দেয়া হলেও কেউই থামতে চায়নি। মৃত্যু পথযাত্রী মানুষটিকে সাহায্য করতে চায়নি। কেন এ নিষ্ঠুরতা? এসব গাড়ির চালক কিংবা যাত্রীরা ভেবেছিলেন, এ রকম একজন আহত মানুষকে গাড়িতে তুলে নিলে পুলিশি হয়রানির মুখে পড়তে হবে। বলতে হয়, তারা নির্দয় ছিলেন কিংবা পুলিশি হয়রানির ভয়ে ভীত ছিলেন। যে হাসপাতালটি তাকে চিকিৎসা দিল না, তারাও কি চিকিৎসকের ব্রত পালনে ব্যর্থ হননি? ঢাকার অনেক হাসপাতালেই এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এসব হাসপাতালের অজুহাত হল এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হলে তাদের অনেক ঝক্কি-ঝামেলায় পড়তে হয়। সেজন্য ট্রমার রোগীকে হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা পঙ্গু হাসপাতালে নিতে হয়। কিন্তু সে নেয়ার পথে যত বিড়ম্বনা এবং ট্রাফিক জ্যাম, তাতে মুমূর্ষ– ব্যক্তি হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাণ হারায়। ঢাকায় ট্রাফিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠার আগে সর্বাগ্রে যে বিষয়টির ওপর মনোযোগী হতে হবে সেটি হল, যানবাহন চালক ও হেলপারদের প্রকৃত মানুষ হতে উদ্বুদ্ধ করা। এর ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর শাস্তির নিশ্চয়তা বিধান করা। এর কোনোটিই কি এখন হচ্ছে? যদি হতো তাহলে জগ্লুলের মতো একজন উঁচু মাপের সাংবাদিককে হয়তো এমন মর্মান্তিকভাবে নিহত হতে হতো না।
অতি সম্প্রতি প্রবীণ অর্থাৎ সিনিয়র সিটিজেনদের বিষয় নিয়ে একটি সেমিনার হয়ে গেল। সেমিনারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি ছিলেন। সেমিনারে প্রবীণদের সমস্যা নিয়ে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। আমাদের দেশে সমস্যা নিয়ে কথা বলায় ঘাটতি নেই। কিন্তু কাজের কাজ কীই বা হয়! বাংলাদেশের জনসংখ্যার তিন থেকে চার শতাংশ মানুষ এখন প্রবীণ। ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও বাড়বে। প্রবীণ মানুষগুলো জাতীয় অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখেন না- এমন নয়। কিন্তু তারা পদে পদে অবহেলা ও অনাদরের শিকার হচ্ছেন। যে দেশ শিশু ও প্রবীণদের যত্ন নেয় না সে দেশকে কী করে সভ্য দেশ বলি! কিছু বিরল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ যে নেই এমন নয়। যারা এসব উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের অবশ্যই প্রশংসা করতে হয়। কিন্তু দেশটিতে যেভাবে পরিবার ও সমাজের বন্ধন শিথিল হয়ে যাচ্ছে, সেখানে অতি সত্বর ব্যাপক পরিকল্পিত কার্যক্রম গ্রহণ না করলে সামাজিক বিপর্যয় ঘটবে বিলক্ষণ। আমরা এমন মমতাহীন, মনুষ্যত্বহীন এবং অপরের প্রতি দায়িত্বহীন, কর্তব্যহীন সমাজ চাই না।
বহু বছর আগে মার্কিন মহিলা সাংবাদিক আনা লুই স্ট্রংয়ের একটি পুস্তিকা পড়েছিলাম। আনা লুই স্ট্রং বিপ্লবী চীনের গভীর অনুরাগী ছিলেন। তিনি চীন বিপ্লব এবং মাও সে তুং বেঁচে থাকার সময়কার চীন সম্পর্কে বেশ কটি বই লিখেছেন। যে পুস্তিকাটির কথা বলছিলাম তার শিরোনাম ছিল, বাহাত্তর বছর বয়সে কেন চীনে ফিরে এলাম। প্রবীণ বয়সে অনেকেরই স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে ফিরে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আনা লিখেছেন- চীনে বাসে চলাচল করতে গিয়ে তার মতো প্রবীণ মানুষদের যে রকম যত্ন নেয়া হয় সেটা তার স্বদেশভূমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নেই। উন্নত দেশে যারা বাসে চলাচল করেন, বিশেষ করে জার্মানিতে, তারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন জার্মানির রাজপথগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে বাসের লেবেল এবং ফুটপাতের লেবেল একই সমতলে থাকে। বাসচালক বাসটিকে ফুটপাত ঘেঁষে এমনভাবে দাঁড় করান যে, যে কোনো বয়সের যাত্রীদেরই আরোহণ কিংবা অবতরণে সামান্যতম সমস্যা হয় না। বাসচালকও তার মিরর দিয়ে লক্ষ্য রাখেন শেষ যাত্রীটি নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে কি-না। কোনো রকম তাড়াহুড়া কিংবা হলস্থূল থাকে না। একই কথা প্রযোজ্য পাতাল রেলের ক্ষেত্রেও। কবে আমাদের এ দেশে এমন নিরাপদ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম গড়ে উঠবে? কেবল ফ্লাইওভার নির্মাণ কিংবা উড়াল রেল সড়ক নির্মাণ সব সমস্যার সমাধান দেবে না। প্রয়োজন হবে সমস্যার সার্বিক দিকগুলো বিবেচনায় নেয়ার। সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী তার জীবন দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিয়ে গেছেন এ সমাজকে আরও মানবিক করে তোলার জন্য আরও কত কী করার আছে। মানবিকতাহীন গণতন্ত্র কিংবা উন্নয়ন কোনোটিরই এক কানাকড়ি মূল্য নেই। জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর রূহের মাগফিরাত কামনা করি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের জন্য অকৃত্রিম সমবেদনা প্রকাশ করি। জানি কোনো সমবেদনাই এ দুঃখের সামান্যতম উপশম ঘটাবে না। জগ্লুলের স্মৃতি রক্ষার জন্য তার পেশার মানুষরা যদি কিছু করেন, তাহলে সেটি একটি উত্তম দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ড. মাহবুব উল্লাহ্ : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.