তদন্তে সংসদীয় কমিটি

ভৈরব উপজেলার গোডাউন থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন (৫৮ হাজার বস্তা) সার লাপাত্তার কিনারা করতে তদন্তে নামছে সংসদীয় কমিটি। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মান্নানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- মো. নজরুল ইসলাম বাবু ও মো. নুরুল ইসলাম ওমর। আগামী এক মাসের মধ্যে সার লুটেরাদের চিহ্নিত করে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মূল কমিটিতে উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কমিটির সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মো. আবদুর রাজ্জাক, মো. মোসলেম উদ্দীন, আবদুল মান্নান, মো. মামুনুর রশিদ কিরন, একেএম রেজাউল করিম তানসেন এবং মো. নুরুল ইসলাম ওমর উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভৈরব বিএডিসি সারের গোডাউন থেকে সার গায়েবের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর বিএডিসির প্রধান প্রকৌশলী (সংরক্ষণ ও কারখানা) মোজাম্মেল হককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এসএম আলম পৃথকভাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জামিল আহমেদকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, জেলা প্রশাসক কর্তৃক ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি এখনও কাজ শুরু করেনি। তবে বিএডিসির তদন্ত কমিটি সম্প্রতি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গুদামের তালা ভেঙে তাদের কাজ শুরু করেছে। তারা গুদামে মজুদ করা টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সার গণনাসহ ক্যাশ মেমো যাচাই-বাছাই করছে। এছাড়া সার আমদানি ও সরবরাহ রেজিস্টারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। তদন্তে আরও ৫ হাজার ৪১৬ বস্তা সারের হিসাব পাচ্ছে না এই কমিটি। তাদের ধারণা একই চক্র পুরো সার কেলেংকারির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এতে করে গায়েব হওয়া বস্তার সংখ্যা বেড়ে ৯২ হাজার ১৩৬ বস্তা হয়েছে। গোডাউন থেকে এভাবে একের পর এক সার লুটের ঘটনায় বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কমিটির পক্ষ থেকেও তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে সংসদ সচিবালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটকে গতিশীল করতে রাজস্ব খাতে নতুন পদ সৃজন করে বিজ্ঞানী ও অন্যান্য জনবলের পদসংখ্যা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি কর্মরত বৈজ্ঞানিকদের দেশ ও বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো, প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি ও আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং নতুন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণে অধিক পরিমাণে বাজেট বরাদ্দেরও সুপারিশ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.