বিচার বিভাগে দুর্নীতির স্থান নেই: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেছেন, বিচার বিভাগে দুর্নীতির কোন স্থান নেই। এ ব্যাপারে কোন প্রকার শৈথিল্য মেনে নেয়া হবে না। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারক বা আদালত কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা জজ ও সমপর্যায়ের বিচারক, চিফ মেট্রোপলিটন এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি আজ এ সব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দুর্নীতি বিষয়ক যে কোন তথ্যকে আমি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান স্পষ্ট ও দৃঢ়। দুর্নীতি অবিচারের জন্ম দেয়। আর এক স্থানে অবিচার সর্বত্র সুবিচারের জন্য হুমকি। তিনি বলেন, বিচারকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা অভিযোগ আমি কখনওই আমলে নেবো না। কিন্ত দুর্নীতির প্রতিটি যুক্তিগ্রাহ্য অভিযোগকে আমি আমলে নেবো এবং উপযুক্ত একজন জজ অভিযোগটি তদন্ত করবেন। এছাড়া আদালত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনা এবং নতুন ও কার্যকর দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকদের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে আয়োজিত এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ৩২৫ জন জেলা জজ ও সমপর্যায়ের বিচারক, চিফ মেট্রোপলিটন এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রতিটি বিভাগ থেকে একজন করে জেলা ও দায়রা জজ বিচার বিভাগের সমস্যা ও তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সিনিয়র জেলা জজ এসএম কদ্দুস জামান।
জেলা জজদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা কেবলমাত্র একজন জ্যেষ্ঠ বিচারক নন, জেলা পর্যায়ে বিচার প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও বটে। অধীনস্থ বিচারক ও আদালত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান ও জেলার বিচার ব্যবস্থায় সামগ্রিক মানোন্নয়নের দায়িত্ব জেলা জজের। আপনাদের প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার মাধ্যমে যে কোন অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির অবসান ঘটাবেন এটাই প্রত্যাশা। তিনি বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি কোন কোন জেলা জজ মধ্যাহ্ন বিরতির পর আদৌ বিচারকাজে বসেন না। এটা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়। কজলিস্টে এমনভাবে মামলা রাখতে হবে যাতে পুরো বিচারিক সময় আদালত কার্যরত থাকতে পারে। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি এ-ও শুনেছি কোন কোন বিচারক বা ম্যজিস্ট্রেট যাদের পরিবার ঢাকায় থাকেন তারা বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং  রোববার দুপুরে ফিরে যান কর্মস্থলে। এই অবস্থাও কাম্য নয়। আপনারা সঠিক সময়ে আদালতে আসবেন এবং বিচারিক সময় বিচার কাজে ব্যাপৃত থাকবেন এবং অন্য বিচারকদের একই ভাবে নিয়মানুবর্তী ও সময়নিষ্ঠ হতে সহায়তা করবেন।

No comments

Powered by Blogger.