৩০ বছরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি ভূপালের ক্ষতিগ্রস্তরা

ক্যান্সার ও আলসার আক্রান্ত প্রায় বধির রামপিয়ারি বাঈ (৯০) এখন চলতে পারেন না। তবু ভূপাল ট্রাজেডির ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচারের জন্য আজও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বিশ্বের ভয়াবহতম শিল্প দুর্ঘটনায় ৩০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার। ১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ভূপালের ওই কীটনাশক কারখানা ইউনিয়ন কার্বাইডে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রায় ৩২ টন বিষাক্ত মিথাইল আইসেসায়ানেট গ্যাস রাতের বেলায় মিশে যায় শহরের বাতাসে। শহরের প্রায় ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন ওই বিষাক্ত গ্যাসে। ভারতের মধ্যপ্রদেশ সরকারের হিসেবে তাৎক্ষণিক মৃতের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭৮৭ জন। আর ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ’র তথ্যানুসারে দুর্ঘটনার প্রথম তিন দিনেই মৃত্যু হয় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় অসুখ-বিসুখে মৃত্যু হয় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
ভূপালের সেই কারখানার পাশে নিজের বাড়িতে দাঁড়িয়ে রামপিয়ারি বাঈ বলেন, ‘আমার শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার আদায়ে লড়াই চালিয়ে যাব। সেদিন কয়েক মিনিটের জন্য সাইরেন বেজে উঠল আর মুহূর্তেই বিষাক্ত হয়ে উঠল শহরের বাতাস। তেজস্ক্রিয়তায় আহত হয়েছিলেন তিনি নিজে। এখন আমার মুখে আলসার। ছেলে প্রভুলালের কয়েকটা অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়েছে। ওই রাতেই আমার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ হাসপাতালে মারা গিয়েছিল। এই নৃশংসতম ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষের ক্ষতিপূরণ ও দায়ীদের শাস্তির জন্য তিনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৮৯ সালে ভারত সরকার ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন কার্বাইড গ্র“পের মধ্যে এক সমঝোতায় ৪৭০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। কিন্তু তা পাঁচ হাজার মানুষের জন্যও যথেষ্ট নয়। ২০১২ সালে সরকার একটি মামলা দায়ের করলেও তার কোনো অগ্রগতি হয়নি। পূর্ণ ক্ষতিপূরণের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্তরা সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ক্ষতিপূরণের দাবিতে অনশন ধর্মঘট শুরু করেছে।

No comments

Powered by Blogger.